স্বস্তি ফিরছে না নিত্যপণ্যের বাজারে। সবজি ও মাছের দাম কিছুটা কমলেও তেল, চিনি-চালে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।
বাজারে ভরা মওসুমেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। কেজিপ্রতি বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, পাইজাম ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা এবং সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৭৮ টাকায়।
বিশ্ববাজারে মসলার দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দেশের বাজারেও বেড়েছে মসলার দাম। ৫০ টাকা বেড়ে জিরা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। এ ছাড়া, এলাচ দারচিনি ও লবঙ্গের দাম মান ভেদে বেড়েছে ৫০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত। সরবরাহ বাড়ায় কমেছে, ডিম, মুরগি ও সবজির দাম।
ক্রেতারা বলছেন, কোনো পণ্যের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা এলে সঙ্গে সঙ্গেই তা কার্যকর হয়। কিন্তু দাম কমলে দেখা যায় উল্টোটা। দাম কমলে পণ্য সরবরাহে গড়িমসি শুরু করে কোম্পানিগুলো। খুচরা বিক্রেতারা কমদামে কোনো পণ্য ক্রেতার হাতে দিতেই চান না।
গত রোববার থেকে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাঁচ টাকা কমে ১৮৭ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু ক্রেতাদের এখনও গুনতে হচ্ছে আগের নির্ধারিত ১৯২ টাকা। কোম্পানিগুলো এখনও নতুন দরে তেল বাজারে ছাড়েনি। আবার এক মাসের আগে চিনির দাম ১০৮ টাকা (প্যাকেট) নির্ধারণ করার পরও ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি।
শুধু বোতলজাত সয়াবিন তেল নয়, খোলা পাম তেলও নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার পাম তেল ১১৭ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও বাজারে ১২০ থেকে ১২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কমেনি মসুর ডাল, আটা ও ময়দার দাম। খুচরায় প্রতি কেজি মসুর ডাল এখনও বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। প্রতি কেজি আটা ৭০ টাকা ও ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।
কিছুটা সুখবর আছে সবজি আর মাছের বাজারে। শীতে সবজি সরবরাহ বাড়ায় কমেছে টমেটো, বাঁধাকপি, সিম, ফুলকপি, নতুন আলু ও গাজরের দাম।
মাঝারি আকারের প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। টমেটো ৭০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতি কেজি সিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লম্বা বেগুনের কেজি ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, গোল বেগুন বা তাল বেগুনের কেজি ৬০ টাকা, নতুন আলুর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি লাউ ৫০ টাকা, করলার কেজি মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৩০ টাকা, দেশি গাজর ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা ও ধুন্দুলের কেজি ৬০ টাকা, শালগমের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে কমেছে মাছের দাম। ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে চাষের কই, তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছ। এছাড়া রুই, কাতলা কার্পজাতীয় চাষের মাছ ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে দেশি জাতের মাছের দাম খুব একটা হেরফের হয়নি। এ ছাড়া মাংস ও অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মালিবাগ বাজারের মাছ বিক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, এখন মাছের দাম কম। সব ধরনের চাষের মাছের দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
রামপুরা বাজারের ক্রেতা আলেয়া বেগম বলেন, কোনো পণ্যের দাম বাড়লে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায়। কিন্তু কমলে সেটা আর আর কমে না। এগুলো দেখার কেউ নেই। সরকার দেখেও দেখে না। আমরা প্রতারিত হচ্ছি। বাজার এখন একটা মগের মুল্লুক।
দোকানী আফসার আলি জানান, সয়াবিন তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা কমলেও কোম্পানি সেই তেল এখনও সরবরাহ করেনি। আগের দামেই তেল বিক্রি হচ্ছে। আমরা নির্ধারিত দামে চিনি কিনতে পারছি না, এ জন্য বিক্রিও করতে পারছি না। কোম্পানি ঠিকমতো পণ্য দেয় না। বেশি দামে পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনে এনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। আমরা এটা বাধ্য হয়েই করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১১:৩২ ১৯৪ বার পঠিত