নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, ২১ জানুয়ারির পর আমরা সবাইকে আলাদাভাবে ডাকব। ইমাম, শিক্ষক, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার, দলের ভালো মানুষদের নিয়ে আমরা মাঠে নামবো। মাদক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নামবো। অন্তত আমদের এলাকাটি আমরা ঠিক করব।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) ফতুল্লার পুর্ব ইসদাইরে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন । অনুষ্ঠানে শামীম ওসমানকেও বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
শামীম ওসমান বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে কেন গিয়েছিলেন এক সাংবাদিক আমাকে এ প্রশ্ন করেছিলেন। আমি তাকে বলতে চাই, মাসখানেক আগে বিএনপির প্রোগ্রাম হলো। একটা ছেলে মারা গেল। যে ছেলেটা মারা গেছে বিএনপি বলবে তাদের কর্মী, আওয়ামী লীগ বলবে আমাদের আত্মীয়। পুলিশ বলবে সাধারণ পথচারী, সাংবাদিকরা ভাগ হয়ে গিয়ে কথা বলবে। সত্য কোনটা, সত্য সে একটা মানুষ, এক মায়ের সন্তান, এক বাবার সন্তান। সে যে দলই করুক না কেন। সত্য হলো তাকে আর কেউ ফেরত দিতে পারবে না। আর যেহেতু পারবে না তাই কারো মৃত্যু আমরা কামনা করি না।
দেশের বিভিন্ন স্থানে এরকম সংঘর্ষ হয়েছে ও মানুষ মারা গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুনিরা এখন একটা দলের নেতৃত্বে চলে এসেছে। তারা একটা সিন্ডিকেট করতে চায়। তখন আমি একদম একা কেউ জানে না, পুলিশও জানে না। সাংবাদিকদের কাছে ধরা খেয়েছি, তারা ছবি তুলল। আমাকে তারা জিজ্ঞাসা করলো কেন এসেছি। আমি বলেছি এমনি। কারণ কোনো উদ্দেশ্যে না। যদি উদ্দেশ্যে যেতাম একা যেতাম না। (সাংবাদিক) প্রশ্ন করেন, যদি আপনার উপর আক্রমণ হতো? আমি বললাম মারতো, আমাকে মেরে যদি শান্তি পায় মারতো। আমার উদ্দেশ্য ছিল এখানে যেন কোনো ঘটনা ঘটানোর সুযোগ কেউ করতে না পারে। যেই খবর আমরা পেয়েছিলাম সেটি করতে পারে নাই।
বিএনপির সভার বিষয়ে তিনি বলেন, মিটিং হয়েছে এটি গণতান্ত্রিক অধিকার, তারা (বিএনপি) করবে। রাজনীতির ভাষা শালীন করতে করতে হবে। আমাকে গালি দেন কিন্তু জাতির পিতা ও জাতির পিতার কন্যাকে নিয়ে কথা বলার সময় অবশ্যই সচেতনতা অবলম্বন করুন।
স্কুলের নাম পরিবর্তন নিয়ে চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে এ সংসদ সদস্য বলেন, নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরি স্কুলের নাম যেন সেই নামেই রাখা হয়। সেজন্য আমি জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ করি। আমরা নারায়ণগঞ্জের অনেকে আছি আমরা চাইলে নিজেরাই এ স্কুল চালাতে পারি।
শামীম ওসমান বলেন, আমরা অনেক কাজ দ্রুত করতে চেষ্টা করি কিন্তু আমলাতান্ত্রিক, রাজনৈতিক জটিলতা, হিংসা এসব কারণে দ্রুত করা সম্ভব হয় না। ২ বছর আগে নারায়ণগঞ্জের জন্য বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করিয়েছি। ২ বছর ধরে এটার কাগজ এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করছে। অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে এসেছি। আগামী সংসদ অধিবেশন আছে। সেদিন হয়তো আমার ভাষা আর ঠিক থাকবে না। সেদিন পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে যা বলার বলব। আমি জানি কিভাবে আদায় করতে হয়। সে অভ্যাস আমার আছে।
নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি চেয়ে নিয়েছিলাম মেডিকেল কলেজ। অনেকে মেডিকেল কলেজ আড়াইহাজার, রূপগঞ্জে নিতে চায়। এখন নাকি জমি কিনতে ৩ পার্সেন্ট ব্যবসা হয়। কি একটা ব্যাপার স্যাপার নাকি আছে। আমার বিশ্বাস এই মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও আইটি ইন্সটিটিউটসহ আরও কিছু বড় প্রজেক্ট এখানে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে করব। একটা ওয়ান স্টপ সার্ভিস এখানে হোক চাই, যেন ঢাকার যেতে না হয় আমাদের। এবার আমি শুধুমাত্র ফতুল্লা এলাকার জন্য ৭০ কোটি টাকা পাশ করিয়েছে রাস্তাঘাট ও ড্রেন নির্মাণের জন্য।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যা চলছে। এখন যেভাবে আকাশে শকুনেরা উড়ছে আমি শামীম ওসমান হিসেবে বাড়তি কিছু দায়িত্ব থাকে আমার উপর। এসব দায়িত্ব পালন করি বলেই আমার উপর বোম ব্লাস্ট হয়, ওয়ান ইলেভেনের সরকার প্রথমে আমাকে টার্গেট করে। বাসায়ও বলি না, শেয়ার করি না। রাত ২/৩/৪ টা পর্যন্ত জেগে থাকি, দেশে বিদেশে কথা বলি। ইনশাআল্লাহ আমরা সবকিছু ওভারকাম করব। আমি ইলেকশন করি কিনা ভোট করি কিনা ঠিক নাই, বাঁচি কিনা তাও ঠিক নাই।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী চন্দন শীল, জেলা মহিলা সংস্থার সভানেত্রী সালমা ওসমান লিপি প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৪২:৪৪ ৩১৭ বার পঠিত