দেশের প্রথম পারমাণবিক কেন্দ্রের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি হতে যাচ্ছে নতুন বছরে। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুতের দামের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলছেন, রূপপুরের বিদ্যুতের দাম কয়লা ও তেলভিত্তিক কেন্দ্রের বিদ্যুতের দামের চেয়ে কম হবে। একই সঙ্গে ধীরে ধীরে তেলনির্ভর কেন্দ্র থেকে সরে আসবে দেশ।
সম্প্রতি পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনকালে একথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এখানে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম কেমন হবে, তা আমরা আগামী বছরের মধ্যে নির্ধারণ করে ফেলব। আমরা এরইমধ্যে খসড়া তৈরি করেছি। এ মুহূর্তে আমাদের হিসাব বলছে যে, এর প্রতি ইউনিট ৫ থেকে ৬ টাকার মধ্যে থাকবে। দাম যদি এর মধ্যেই থাকে, তাহলে তো সেটি আমাদের জন্য বেশ ভালো। আমরা যদি কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি, তাহলে কয়লার দামের ওপর ভিত্তি করে বিদ্যুতের দাম ওঠা-নামা করবে। তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রেরও একই অবস্থা। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রেও তাই। সেক্ষেত্রে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুবিধা হচ্ছে, এর দাম স্থির থাকে। আগামী ৬০ বছর আমরা একই রকম দাম পাব। পাশাপাশি ভালো মানের বিদ্যুৎও পাব।’
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আগামী বছরই ১ হাজার মেগাওয়াটের তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া আগামী তিন বছরের মাথায় বেশ কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের হয়তো ৮ থেকে ১০ শতাংশ তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চলবে। কারণ সেগুলো আমাদের প্রয়োজন। তাছাড়া অতিরিক্তগুলোর মধ্যে সবই আগামী ৩ বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে।
রূপপুরে নির্মাণাধীন ২৪০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রের হাত ধরে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩২তম দেশ হিসেবে এখন পারমাণবিক এলিট ক্লাবে। তবে দেশের প্রথম পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম কেমন হবে, সে নিয়ে জল্পনা দীর্ঘদিনের। কেন্দ্রটির নির্মাণযজ্ঞ তত্ত্বাবধান করছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। আর এখানকার উৎপাদিত বিদ্যুৎ গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়ার ভার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের। এই দুই মন্ত্রণালয়ই রূপপুরের বিদ্যুতের দাম ঠিক করতে চলেছে। এবিষয়ে কয়েক দফায় বৈঠকও হয়েছে। এনিয়ে নতুন বছরেই দুই পক্ষের ক্রয়চুক্তি সম্পাদন করতে চান নীতিনির্ধারকরা।
এদিকে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে উৎপাদনে যাওয়ার কথা থাকলেও রূপপুরের বিদ্যুতের জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। যার মূল কারণ হচ্ছে, সঞ্চালন অবকাঠামো নির্মাণে ধীরগতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৯:০০ ২০৩ বার পঠিত