আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নেতিবাচক, ধ্বংস, ষড়যন্ত্র ও দুর্নীতির রাজনীতি করে বিএনপি অসুস্থ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে যাবেন, এ নিয়ে কটাক্ষ নয়। তবে অসুস্থ রাজনীতি করে অসুস্থ হলে সেই অসুস্থ বিএনপিকেও হাসপাতালে নিতে হবে। তাদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নেতিবাচক, ধ্বংস, ষড়যন্ত্র ও দুর্নীতির রাজনীতি করে বিএনপি অসুস্থ হয়ে গেছে। তাদেরও হাসপাতলে যাওয়া দরকার।’
ওবায়দুল কাদের আজ সোমবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি’র সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, টানেল সহ উন্নয়নের একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে বিএনপি চোখে সর্ষে ফুল দেখছে। কারণ তারা এসব উন্নয়ন কখনোই দেখাতে পারেনি। খাদ্যে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় তাদের মনে জ্বালা। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, একদিনে শত সেতু উদ্বোধন হওয়ায় তাদের জ্বালা ধরেছে।
বিএনপি-জামায়াতের যে কোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সরকারে আছি। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া। এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আগুন নিয়ে সন্ত্রাস, লাঠি নিয়ে খেলা, রাস্তা অবরোধ করে অশান্তি সৃষ্টি করার মতো কাজ করলে জনগণের জানমাল রক্ষায় আমরা জনগণের পাশে থাকবো। সেজন্যই আজকের এই শান্তি সমাবেশ। কেউ আগুন নিয়ে খেলতে চাইলে তা মেনে নেয়া হবে না। স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, মানুষের জানমাল নিয়ে খেললে, খেলা হবে। যে কোনো নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ। সরকার হটাতে গিয়ে তারাই হটে যাবে। আওয়ামী লীগ এ দেশে ভেসে আসেনি। বিএনপি সরকার পতন ঘটাবে আর বাংলার মানুষ চুপ করে বসে থাকবে, সেটা ভাবার সুযোগ নেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব নাকি আমার কথার উত্তর দিতে চান না। আমি বলতে চাই, আমার কথার উত্তর দেয়ার মতো সামর্থ্য ও সাহস ফখরুল ইসলামের নেই। আমি সত্য কথা বলি আর ফখরুলরা মিথ্যাচার করেন। কথায় কথায় তারা মিথ্যাচার করেন। এটাই হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি।
নির্বাচন বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমেরিকান সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হবে। আমাদের দেশে আইন দিয়ে নির্বাচন কমিশন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ত্রুটিমুক্ত অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করবে। শেখ হাসিনার সরকার দেশের সিটিং গর্ভমেন্টের মতো রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন-শৃঙ্খলা সবই থাকবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকারের অধীনে নয়।
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এতে ভয় পাচ্ছেন কেন, ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। জানি শেখ হাসিনার উন্নয়নে দেশের মানুষ খুশি আর আপনাদের (বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলোর) মন খারাপ। নির্বাচনে হেরে যাবেন এই ভয়ে ফখরুল সাহেব মাঝেমাঝে রেগে যান। হেরে গেলেও রেগে যান। আগেভাগে হারার আগে হারছেন কেন? নির্বাচনে আসেন আপনাদের সক্ষমতার একটা পরীক্ষা হয়ে যাক। আমরা রেডি আছি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, এডভোকেট কামরুল ইসলাম ও ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. দিলীপ রায় প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি কাগজে দেখলাম মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস সাহেব হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমি তাদের রোগমুক্তি কামনা করি। রোগমুক্তি লাভ করে আমাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখুক সেটাই চাই। আমাদের সরকার করোনাভাইরাসের তিনটা টিকা দিয়েছে। প্রথম ডোজ, দ্বিতীয় ডোজ এবং বুস্টার ডোজ, এখন এক্সট্রা ডোজও একটা দিচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গয়েশ্বর বাবু, মির্জা আব্বাসসহ ওদের নেতাদের জন্য আমরা এক্সট্রা ডোজও রেখেছি, আপনারা এক্সট্রা ডোজ নেন। আপনারা সুস্থ থাকুন, সরকারের সমালোচনা করুন। কিন্তু দেশে অশান্তি সৃষ্টি করবেন না। তাহলে দেশের মানুষ প্রতিহত করবে।’
জেল থেকে বের হওয়ার পরে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের ‘সুর পাল্টেছে’ বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘তারা বলছেন, তারা সরকারকে ধাক্কা দিতে চান না। ধাক্কা দিতে গিয়ে তারা (বিএনপি) নিজেরাই পড়ে গেছেন। সেই জন্য এখন লাইনে এসেছেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল, আমরা পদ্মা সেতু করতে পারবো না। এখন তারা গোপনে পদ্মা সেতুর ওপাড়ে যায়। ওপাড়ে গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করে। করোনা টিকার বিরুদ্ধেও অপবাদ দিয়ে গোপনে টিকা নিয়েছিলেন। মেট্রোরেলে সমগ্র বাংলাদেশ খুশি। কিন্তু পত্রপত্রিকায় দেখেছেন, বিএনপির এটা ভালো লাগে না। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি কখন আপনারা মেট্রোরেলে চড়বেন।’
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৬:২৬ ১৮৪ বার পঠিত