রংপুরে গোখাদ্যের দাম বাড়ায় , বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খামার

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » রংপুরে গোখাদ্যের দাম বাড়ায় , বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খামার
শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩



রংপুরে গোখাদ্যের দাম বাড়ায় , বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খামার

মোস্তাফিজার রহমান রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরে হু হু করে বাড়ছে গোখাদ্যের দাম। এমন অবস্থায় পশুপালন করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে কৃষক ও খামারিদের। বাড়তি দামের ধকল সামলাতে না পেরে অনেক ছোট ও মাঝারি খামারি খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের আট উপজেলায় গরুর মোট খামার রয়েছে ১ হাজার ৬৮৮টি। এছাড়া কৃষকের ঘরে গৃহপালিত প্রায় ১০ লাখ গরু আছে।
জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের কয়েকজন গোখাদ্য ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি গমের ভুসিতে ১০ টাকা, বুটের খোসায় ৮ টাকা, চালের খুদে ৪ টাকা, দানাদার ফিডে ৬ টাকা ও ধানের কুঁড়ায় ২ টাকা দাম বেড়েছে।
বর্তমানে প্রতি বস্তা ভুসি (৩৭ কেজি) ২ হাজার ২৫০ টাকা, বুটের খোসা (২৫ কেজি) ১ হাজার ৪৫০ টাকা, চালের খুদ (৫০ কেজি) ১ হাজার ৭০০ টাকা, দানাদার ফিড (২৫ কেজি) ১ হাজার ৩০০ টাকা ও ধানের কুঁড়া (৩৫ কেজি) ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দাম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত তিন বছরে প্রতি কেজি গমের ভুসিতে ২৮ টাকা, বুটের খোসায় ২০ টাকা, চালের খুদে ১৮ টাকা, দানাদার ফিডে ২০ টাকা ও ধানের কুঁড়ায় ৫ টাকা বেড়েছে।
পশুপালনকারীরা বলছেন, খড় ও ঘাসের পাশাপাশি গরু ও ছাগলকে এসব খাদ্য খাওয়ানো হয়। এগুলোর দাম দফায় দফা বৃদ্ধি পেলেও দুধের দাম বাড়ছে না। এমন অবস্থায় লোকসান দিয়ে অনেকেই খামার চালাচ্ছেন।
রংপুর নগরীর খাসবাগ এলাকায় ৮০টি গরু পালন করা খামারি শাহাদাত ইসলাম জানান, বছরে অন্তত তিন দফায় গোখাদ্যের দাম বাড়ে। কিন্তু দুধের দাম দু-তিন বছরে একবার বাড়ে। নতুন বছরে ফের ফিড, ভুসি, বুটের খোসা ও খুদের দাম বেড়েছে। গাভীকে খড়ের পাশাপাশি এগুলো না খাওয়ালে শরীর ভালো থাকে না, দুধ কম হয়।
শাহাদাত বলেন, প্রতিদিন গড়ে ২৫ হাজার টাকা খরচ, কিন্তু দুধ বিক্রি করে পাই ১৮ হাজার টাকা। বর্তমানে গাভির খামার করে তেমন লাভ নেই, বরং লোকসানই হচ্ছে।
সদর উপজেলার পানবাজার এলাকার খামারি নিয়ামুল ইসলাম বলেন, ‘খাদ্যের যে দাম, গরুর খাওন কমে দিছি। খাওনের অভাবে গরুগুলা হাড্ডি নাগি গেইছে। গরুর খামার করি আর পোষাওছে না বাহে। বেচে দিবার নাগছি।’
রংপুর নগরীর বারো আউলিয়া এলাকার গড়ে উঠেছে গরুর জন্য আবাসিক হোটেল। সেই হোটেলের উদ্যোক্তা আসানুর রহমান জানান, গোখাদ্যের দাম বাড়াতে একটু ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু এখনই যদি মূল্যবৃদ্ধি রোধে জোরদার মনিটরিং করা না হয় তাহলে প্রান্তিক খামারিরা টিকতে পারবে না।
রংপুর ডেইরি ফার্মস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লতিফুর রহমান মিলনের দাবি, বর্তমান অবস্থায় খামারিদের বাঁচাতে হলে দুধের দাম বাড়ানো, গোখাদ্যে ভর্তুকি, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে খামারি পর্যায়ে চিকিৎসাসেবা বৃদ্ধি, নিম্নমানের গুঁড়া দুধ আমদানি বন্ধ, গোখাদ্যের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিচার ও ভেজাল খাদ্য রোধে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, গোখাদ্যের দাম বাড়ায় ছোট ও মাঝারি খামারিরা বিপাকে রয়েছেন। তাদের আমরা দানাদার খাবারের বিকল্পের পরামর্শ দিচ্ছি। গাভীকে খড়ের পাশাপাশি কাঁচা ঘাস বেশি খাওয়াতে হবে। এছাড়া সমবায়ের ভিত্তিতে খামার গড়ার জন্য খামারিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এটি করলে খরচ কমবে, লাভ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৩:০৮   ১৭২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


কুয়াকাটায় প্লাস্টিক দূষনের ভয়াবহতা চরমে
বিনিয়োগ ও বাণিজ্য প্রসারে পর্যটনের অবদান অপরিসীম - হাসান আরিফ
মসজিদে নববীর আদলে গড়ে তোলা হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ - ধর্ম উপদেষ্টা
বাংলাদেশ চোখের সেবা সম্প্রসারণে অরবিসের সাথে কাজ করতে আগ্রহী : অধ্যাপক ইউনূস
এলডিসি দেশগুলোর জন্য ডলার বরাদ্দে ইইউর সমর্থন চাইল বাংলাদেশ
ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে হাব-এর মতবিনিময় সভা
আদানির সঙ্গে আড়াইশ’ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি বাতিল কেনিয়ার
বেনাপোল সীমান্ত থেকে ভারতীয় ফেনসিডিল জব্দ
সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় জড়ানো নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে স্বাগত জানালো আরএসএফ
লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরও ৮২ জন

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ