স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের একেক বেসরকারি হাসপাতাল ও অন্যান্য সেবা খাতের একেক রকমের চার্জ, টেস্ট ফি সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য প্রাইভেট স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরকারিভাবে একটি গাইডলাইন তৈরি করে হাসপাতালগুলোর মান অনুযায়ী ক্যাটেগরি তৈরি করে দিয়ে সেই ক্যাটেগরি মান অনুযায়ী ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটি কমিটি করে এক মাসের মধ্যেই একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হবো আমরা। এতে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি পাবে, যত্রতত্র ফি দিয়ে দেশের জনগণের অযাচিত অর্থ ব্যয় হবে না।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সারাদেশের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ক্যাটেগরি নির্ধারণ বিষয়ে পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ক্যাটাগরি নির্ধারণের ধরন প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, বেসরকারি হাসপাতালের বেড সংখ্যা, যন্ত্রপাতি, অবস্থান, লোকবল, সুযোগ-সুবিধা ভেদে বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ, বি, সি ও ডি ক্যাটেগরিতে ভাগ করে দেওয়া হবে। ‘এ’ ক্যাটাগরির একরকম সুবিধা, ‘বি’ ক্যাটাগরির একরকম সুবিধা এবং ‘সি’ ক্যাটাগরি হাসপাতালগুলো মান ভেদে এবং সুযোগ-সুবিধা উল্লেখসহ সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করা থাকবে। এতে মানুষ আগে থেকেই জানতে পারবে কোন হাসপাতালে গেলে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে এবং চিকিৎসা বাবদ কত ব্যয় হবে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার মান প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে বর্তমানে অলিতেগলিতে ক্লিনিক হয়ে গেছে। কিছু ক্লিনিক মানসম্মত সেবা দিলেও অধিকাংশেরই সেবার মান ভালো না। ফি-ও নেওয়া হয় ইচ্ছেমতো। স্ট্যান্ডার্ড ও নিয়ম অনুযায়ী যন্ত্রপাতি নাই, কিন্তু মেশিন আছে যেগুলো; সেগুলোও ঠিকমতো কাজ করে না। সিট অনুযায়ী অন্যান্য বিষয়গুলো অনুপস্থিত রয়েছে। মানসম্পন্ন চিকিৎসক থাকে না, অথচ ফি নেওয়া হয় অনেক বেশি। এসব অনিয়ম আর চলতে পারবে না।
দেশে নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর দেশে আট জন ব্যক্তি নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই আটজনের মধ্যে পাঁচজনই মারা গেছেন। এ জন্য দেশবাসীকে শীতকালীন খেজুরের রস খাওয়ার ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান, মহাসচিব ও সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) সৈয়দ মজিবুল হক, পপুলার হাসপাতালসহ অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৭:৪২ ১৭৯ বার পঠিত