ভারত থেকে নদীপথে আসতো হেরোইন। এরপর দেশের বিভিন্নস্থানে পৌঁছে দিতেন নারী সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের কালিয়াকৈর এবং নওগাঁয় অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের হেরোইনসহ এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিন (র্যাব)।
তারা হলেন- চক্রের অন্যতম হোতা মো. শাকিবুর রহমান ওরফে শাকিব (৩৫), তার স্ত্রী মোছা. রাজিয়া খাতুন (৩৩) ও মোছা. সেলিনা খাতুন ওরফে শিরিনা (৩৮)।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, চক্রটি পাশের দেশ থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে নদীপথে প্রতি মাসে ৪-৫ কেজি হেরোইন নিয়ে আসতো। মাদক পরিবহনের কৌশল হিসেবে শাকিব নারীদের ব্যবহার করতো। তাদের মাদক কারবার চক্রে ১০-১২ জন সক্রিয় নারী সদস্য রয়েছে।
চাহিদা অনুযায়ী বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিনিয়ত ৫০০/৬০০ গ্রাম করে হেরোইন বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে পাঠিয়ে দিতো। প্রতিটি চালান পরিবহনের জন্য বহনকারীকে ১৫-২০ হাজার টাকা দেয়া হতো। চালানের পরিমাণ বেশি হলে শাকিব বিভিন্ন সময় তার নিজের মোটরসাইকেলযোগে পরিবহন করতো। এ চালানে তিন কেজির বেশি হেরোইন থাকায় শাকিব নিজেই তা বহন করছিল।
র্যাব মুখপাত্র আরও বলেন, শাকিব তার নওগাঁর বাসায় আরও দুই কেজি হেরোইন থাকার ব্যাপারে তথ্য দেয়। পরে তার বাসায় অভিযান পরিচালনা করে তার স্ত্রী গ্রেফতার সেলিনা খাতুনের কাছ থেকে দুই কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শাকিব আগে চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল এবং এলাকায় তার বিরুদ্ধে একাধিক চুরির অভিযোগ রয়েছে। গত প্রায় দুই বছর ধরে সে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। সে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তার ব্যবসায়িক সহযোগীর মাধ্যমে হেরোইন সংগ্রহ করে প্রথমে নিজের বাড়িতে সংরক্ষণ করতো।
পরবর্তীতে চাহিদা অনুযায়ী বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করতো। বিভিন্ন সময় মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন স্থানেও এসব মাদকের চালান পরিবহন করতো শাকিব।
এছাড়াও চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন সময় যাত্রীবাহী বাস, লঞ্চ এবং কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক কারবারিদের কাছে হেরোইন সরবরাহ করতো শাকিব। হেরোইন বিক্রির টাকা সংগ্রহ করা হতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৫:২৫ ১৬৫ বার পঠিত