দেশের প্রায় ২৩ লাখ প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পৌঁছাতে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার গ্রামীণফোন। এর মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ নারী ও তরুণ সরাসরি প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুবিধা লাভ করবে।
সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ‘সেফ ডিজিটাল স্পেস ফর গার্লস অ্যান্ড ইয়ুথ’ শীর্ষক এ প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, এমপি; মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ; তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সিএএমপিই’র নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী; গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান; চীফ কর্পোরেট এ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও), হ্যান্স মার্টিন হেনরিক্সন এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোসসহ অন্যরা।
২০২১ সালে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপ বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ড - এ চারটি দেশে একটি সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষায়, প্রায় ৮৫ শতাংশ বাংলাদেশি তরুণ অনলাইনে সহিংসতাকে অত্যন্ত গুরুতর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে; তাদের মধ্যে ২৯ শতাংশ নিজেরাই অনলাইনে সহিংসতার শিকার৷ করোনা মহামারি চলাকালে অনলাইন সহিংসতার হার ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কর্তৃক কিশোরী ও যুব নারীদের মধ্যে সহিংসতার ভয় নিয়ে পরিচালিত একটি অনুসন্ধানমূলক গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের ৫৬.৬ শতাংশ কিশোরী বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় এমন আপত্তিকর মন্তব্য পেয়েছে। এছাড়া, মোট ৭৮.৩ শতাংশ কিশোরী ও নারীর মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাওয়া এবং মানসিকভাবে ট্রমায় ভোগার পেছনে অনলাইন হয়রানি দায়ী। ফলশ্রুতিতে, অনেকেই ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার বন্ধ করে দেন, হীনমন্যতায় ভোগেন এবং অপর ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ এড়িয়ে চলেন।
এই সমস্যগুলো সমাধানের লক্ষ্যে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল নরওয়ে, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন ও টেলিনর ‘সেফ ডিজিটাল স্পেস ফর গার্লস অ্যান্ড ইয়ুথ’ (এসডিএসজিওয়াই) প্রকল্পের মাধ্যমে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে। এই প্রকল্পটি তরুণদের, বিশেষ করে কিশোরীদের তথ্য-অনুসন্ধান জ্ঞান, যোগাযোগ, শিষ্টাচার, ডিজিটাল দক্ষতা, অনলাইন নিরাপত্তা এবং অনলাইন স্পেসে নিরাপদ ও দায়িত্বশীল আচরণ অর্জনে সহায়তা করার মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর ‘ডিজিটাইজেন’ হিসেবে গড়ে তুলবে। এ প্রকল্পটির মাধ্যমে আড়াই বছরের মধ্যে ডিজিটাল জ্ঞান, দক্ষতা, সহনশীলতা ও নিরাপদ অনলাইন পরিবেশে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে ২৩,৫০,০০০ কিশোরী ও তরুণীদের, যাদের বেশিরভাগই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৫:৫১ ১৮৮ বার পঠিত