আখকর্তন যান্ত্রিকীকরণ হলে সময় ও অর্থব্যয় কমবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান অপু।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরুজ চিনিকলের আওতাধীন আকন্দবাড়িয়া বীজ উৎপাদন খামারে হারভেস্টার দিয়ে আখকর্তন পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আজ দুপুরে তিনি এ পরিদর্শনে যান। এসময় আরিফুর রহমান অপু বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। এরসাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তি বা যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে কৃষিতে কায়িক শ্রম কমিয়ে যন্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে।
তিনি বলেন, চাষাবাদ, বীজবপন, নিড়ানি, সার দেয়া, ফসল কাটা, মাড়াই, ঝাড়া এমন কি প্যাকেট করা পর্যন্ত সবই হচ্ছে আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে। কৃষির যান্ত্রিকীকরণের ফলে একদিকে যেমন উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ছে অন্যদিকে উৎপাদন ব্যয় ও সময় কমছে। একই সঙ্গে ফসলের অপচয়ও কমছে। আবাদী জমি ব্যাপকহারে কমলেও কৃষিপন্য উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হচ্ছে। এই সাফল্য অর্জনের পেছনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি।
আরিফুর রহমান অপু বলেন, বর্তমানে দেশের মোট আবাদী জমি প্রায় যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে। আখ চাষে সব পর্যায়ে অর্থাৎ জমি তৈরি থেকে চিনি উৎপাদন পর্যন্ত সকল পর্যায়ে যন্ত্রের ব্যবহারের আওতায় আনতে পারলে উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি উদ্ভাবিত উন্নত উচ্চ ফলনশীল জাতের আখের আবাদ বাড়াতে হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আখ কাটার সময় আখকাটার লেবার সংকট দেখা দেয়। ঘন্টায় ২০টন আখকর্তন করতে পারে হারভেস্টার মেশিন। লেবার দিয়ে এক একর জমির আখ কাটতে প্রায় ১১ হাজার টাকার মত খরচ পড়ে। সেই একই পরিমান আখ হারভেস্টার মেশিন দিয়ে কাটলে খরচ পড়বে ৩ হাজার টাকা। এতে একর প্রতি সাশ্রয় হবে ৮ হাজার টাকা। শুধু তাই নয় হারভেস্টার দিয়ে আখ কাটতে পারলে চিনির রিকভারীও বৃদ্ধি পাবে।
দেখা গেছে লেবার দিয়ে এক একর আখ কাটলে তাতে ফলন আসে ১৭ টন। মেশিন দিয়ে কাটলে ফলন হয় ২০ টন। ৩ টন আখের বাজার মূল্য ১৩ হাজার ৫শ টাকা।
শিল্পমন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানার একান্ত উদ্যোগে প্রণোদনা হিসাবে চিনিশিল্প করপোরেশন এ হারভেস্টার মেশিনটি উপহার পেয়েছে। এর জন্য করপোরেশন কৃতজ্ঞা প্রকাশ করছে।
দর্শনা কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন বলেন, মৌসুমে আখকর্তন করতে গেলে নানা জটিলতায় পড়তে হয়। বড় সমস্যা লেবার সমস্যা। এ সমস্যা থেকে উত্তোরণ পেতে প্রাথমিকভাবে হারভেস্টার মেশিনের চলাচল উপোযোগি আখ রোপনের একটি ও কর্তনের একটি মেশিন কেনার চাহিদাপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খুব শিগগিরই পাঠাবো। আশা করি আগামী উৎপাদন মৌসুম শুরুর আগেই হাতে পেয়ে যাব। কৃষি বিভাগটি যান্ত্রীকিকরণ হলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক প্রশাসন ইউসুফ আলী, মহাব্যবস্থাপক অর্থ সাইফুল ইসলাম, টারর্বো এগ্রো টেকনোলজি লিমিটেড ইন্ডিয়া গুজরাট’র শক্তিমান সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার রাজস কুমার সরকার, আলিম ইন্ডাস্ট্রিজের জেনারেল ম্যানেজার ও মার্কেটিং ইঞ্জিনিয়ার মো. হুমায়ুন কবীর, কেরুজ চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আশরাফুল আলম ভুইয়া, ব্যবস্থাপক (খামার) সুমন কুমার সাহা, ব্যবস্থাপক (পরি.প্রকৌ.) আবু সাঈদ প্রমুখ ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:০৬:০৫ ১৭২ বার পঠিত