তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা এখনও বাড়েছে। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুই দেশে ৩৬ হাজারেরও বেশি মানুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের কাহারমানমারাস শহরে আঘাত হানা ভূমিকম্প কাপিয়ে দেয় তুরস্ক ও সিরিয়ার বিশাল একটি অংশকে। ভূমিকম্পের পর এখন পর্যন্ত দুই দেশে ৩৬ হাজার ১৪৩ জন নিহত হয়েছে।
তুরস্কের ইমার্জেন্সি কো-অর্ডিনেশন সেন্টার বা এসএকেওএস জানিয়েছে, তুরস্কে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৬৪৩ জনে। এদিকে, সিরিয়ায় নিহত হয়েছে ৪ হাজার ৫৭৪ জন। এর মধ্যে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিহত হয়েছে ৩১৬০ জন বলে জানিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সরকারের উদ্ধার তৎপরতা বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৬ ফেব্রুয়ারি ৪৫ সেকেন্ডের ভূমিকম্পের পর আরও ২৩ শ’র বেশি আফটার শক হয়েছে বলে জানিয়েছে ভূতাত্বিক জরিপ সংস্থা। এতে যেসব ভবন এখনও অক্ষত আছে সেগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগে ১৯৩৯ সালে তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে অন্তত ৩৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে ভূমিকম্পের সাত দিন পেরিয়ে গেছে। এখনও ধ্বংস্তূপের নিচ থেকে মিলছে প্রাণের সন্ধান। শত বাধা, কষ্ট উপেক্ষা করে উদ্ধারকারীরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ধ্বংস্তূপের নিচ থেকে জীবিত কিংবা মৃত সবাইকে বের করে আনতে। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ ও আন্তাকিয়ায় শিশুসহ আরও এক ব্যক্তিকে জীবিতউদ্ধার করা হয়। তবে, এখনও হাজার হাজার মানুষ চাপা পড়ে থাকায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বা তারও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ।
তুরস্কের কাহরামানমারাসের বেশ কিছু এলাকায় উদ্ধার অভিযান বন্ধ হয়ে গেছে। চলছে ধ্বংস্তূপ পরিষ্কারের কাজ। তা সত্বেও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা তাদের নিখোঁজ প্রিয়জনদের সন্ধানে ধসে পড়া ভবনগুলোর সামনে ভিড় করেন। তীব্র শীতে আগুন জ্বালিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন স্বজনদের জীবিত দেখার কিংবা মরদেহ পাওয়ার আশায়।
এদিকে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ার নাগরিকদের জরুরি ভিত্তিতে সাময়িক ভিসা দেয়ার কথা জানিয়েছে জার্মানি। জার্মানিতে বসবাসরত অভিবাসীদের ক্ষতিগ্রস্ত আত্মীয়দের খাদ্য, বাসস্থান ও চিকিৎসাসেবা দিতে এ পদক্ষেপ নিচ্ছে বার্লিন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফিজার বলেন, এটি একটি জরুরি সহায়তা। তুরস্ক ও সিরিয়ার যেসব পরিবার জার্মানিতে আছে, কোনো জটিলতা ছাড়াই দুর্যোগকবলিত এলাকা থেকে নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে আসতে পারবে। তাদের দ্রুত ভিসা দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, নিয়মিত প্রক্রিয়ায় এ ভিসা দেয়া হবে। তবে এই ভিসার মেয়াদ হবে তিন মাস।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৯:২২ ১৬৬ বার পঠিত