এভাটরনের বিপক্ষে কাল প্রিমিয়ার লিগে ২-০ গোলের জয় নিশ্চিত করেছে লিভারপুল। এই জয়ের পর লিভারপুলের মিশরীয় তারকা ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ বলেছেন রেডদের পুনরুত্থানের শুরুটা এর মাধ্যমেই হলো।
বক্সিং ডে’র পর সালাহ প্রিমিয়ার লিগে প্রথম গোলের দেখা পেলেন। এ্যানফিল্ডে ৩৬ মিনিটে সালাহর গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এরপর কোডি গাকপো দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। লিভারপুলের জার্সি গায়ে এটাই গাকপোর প্রথম গোল। জার্গেন ক্লপের দল চার ম্যাচ পর লিগে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে।
দিয়োগো জোতা ও রবার্তো ফিরমিনো ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরাতে পুরো শিবিরই স্বস্তিতে ছিল। অন্যদিকে ভার্জিল ফন ডাইক ছয় সপ্তাহ সাইডলাইনে থাকার পর বদলী হিসেবে দলে ছিলেন। সালাহ বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটি জয়। অনুশীলনেও আমরা এ সপ্তাহে কঠোর পরিশ্রম করেছি। খেলোয়াড়রা জয়ের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল। আশা করছি এর মাধ্যমে ভাল কিছুর শুরু হলো। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই এখন আমাদের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ।’
শীর্ষ চারের অবস্থান থেকে লিভারপুল এখনো ৯ পয়েন্ট পিছিয়ে টেবিলের নবম স্থানে রয়েছে। কিন্তু আগামী সপ্তাহে সেন্ট জেমস পার্ক সফরে যাবার পর চতুর্থ স্থানে থাকা নিউক্যাসলের সাথে পয়েন্টে ব্যবধান কমিয়ে ছ’য়ে নামিয়ে আনার সুযোগ থাকছে লিভারপুলের সামনে। এই ম্যাচের একদিন পরেই রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর প্রথম লেগের ম্যাচ মাঠে নামবে অল রেডরা।
ক্লপ বলেন, ‘আমরা আজ নিজেদের সাধ্যমত চেষ্টা করেই জয়ী হয়েছি। পরিকল্পনাও সঠিক ছিল। আমরা যা করতে পারি তার প্রমান এখন থেকে দিয়ে যেতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। আজকের ম্যাচে পুরো ৯৬ মিনিটের পারফরমেন্স সম্ভবত এ পর্যন্ত এবারের লিগে আমাদের সেরা পারফরমেন্স ছিল।’
শেষ ১২ ম্যাচে মাত্র একটিতে জয়ী এভারটনের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে কিছুটা হলে আত্মবিশ্বাসী ছিল লিভারপুল। নতুন কোচ সিন ডায়েচের অধীনে গত সপ্তাহে গুডিসন পার্কে টেবিলের শীর্ষে থাকা আর্সেনালকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করা এভারটনও অবশ্য সেই আত্মবিশ্বাসটা ধরে রেখেই খেলতে নেমেছিল। রেলিগেশন জোন থেকে বেরিয়ে আসার অস্বস্তিকর লড়াই যেকোন দলের জন্যই কঠিন। পুরো দলের সামনে এসময় যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি থাকে সেটা থেকে বেরিয়ে আসাই মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ডায়চের সামনেও সেই চ্যালেঞ্জই প্রতিনিয়ত দেখা দিচ্ছে। ৩৬ মিনিটে ডারউইন নুনেজের সহযোগিতায় সালাহর গোলে লিভারপুল এগিয়ে যাবার কয়েক সেকেন্ড আগে জেমস টারকোভস্কির হেড পোস্টে লেগে ফেরত না এলে তখনই হয়তো এভারটন লিড নিতে পারতো। তার পরিবর্তে নুনেজ বল পেয়ে সালাহর দিকে এগিয়ে দেন। জর্ডান পিকফোর্ডকে পরাস্ত করতে কোন ভুল করেননি সালাহ।
এরপর দ্রুত আরো একটি কাউন্টার এ্যাটাক থেকে দ্বিতীয়ার্ধের এভারটন আরো পিছিয়ে পড়ে। মধ্যমাঠে এন্ডি রবার্টসন বল ছিনিয়ে নিয়ে ট্রেন্ট আলেক্সান্দার-আর্নল্ডের দিকে বাড়িয়ে দেন। আলেক্সান্দার-আর্নল্ডের ক্রসে সহজ ফিনিশিংয়ে ৪৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন ডাচ এ্যাটাকার গাকপো। জানুয়ারিতে পিএসভি আ্ডন্দোভেন থেকে লিভারপুলে আসা গাকপো আশা করছেন এই গোলের মাধ্যমে প্রিমিয়ার লিগের কঠিন শুরুটা কিছুটা হলেও সহজ হবে। গোলটিকে তিনি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। গাকপো বলেন, ‘আমাদের দলের জন্য এটা সত্যিই দারুন একটি ম্যাচ ছিল। আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থেই এই জয়টা প্রয়োজন ছিল।’
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫২:৪৭ ১৭৯ বার পঠিত