মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার সঙ্গে নাকি জ্বীন আছে! এই মিথোলজি বহুল প্রচলিত ক্রিকেট পাড়ায়। মিথ তো মিথই হয়, কেবলই অতিকথা। কিন্তু মাশরাফীর ক্ষেত্রে এই মিথই যেন সত্য।
যে সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আট আসরে মিলে একবারই প্লে অফ খেলতে পারে, তারা কিনা মাশরাফীর ছোঁয়া পেয়েই প্রথম চেষ্টায় উঠে গেছে ফাইনালে।
মিরপুর শের ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রংপুর রাইডার্সকে অলিখিত সেমিফাইনালের মঞ্চে ১৯ রানে হারিয়েছে মাশরাফীর সিলেট।
এই জয়ের জন্য পারফরম্যান্স বিবেচনায় মাঠে উপস্থিত অন্য যেকোন ক্রিকেটারকেই ম্যাচসেরার পুরস্কার দেওয়া সম্ভব। তবে অধিনায়ক মাশরাফীর মাঠে থাকাই যে জয়ের জন্য যথেষ্ট, সেটি আবারও প্রমাণ করে ম্যাচসেরার পুরস্কার অধিনায়ক মাশরাফীকে দিলে খুব বেশি ভুল হবে না।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মিরপুরে আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি) টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে মাশরাফীর দল তুলতে পারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জয়ের পথে থেকেও নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রানের বেশি তুলতে পারেনি রংপুর।
টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান তুলতে সক্ষম হয় মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার সিলেট স্ট্রাইকার্স। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে
সিলেটের পক্ষে এদিন ওপেনিংয়ে নেমে দলকে ভালো সূচনা এনে দেন নাজমুল শান্ত এবং তৌহিদ হৃদয়। যেখানে শান্তর ব্যাট থেকে আসে সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪০ রান। আরেক ওপেনার হৃদয় করেন ২৫ রান। এদিন ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষকে চমকে তিনে নামেন সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফী।
অধিনায়কের নিজের সিদ্ধান্ত যথার্থই প্রমাণ করেন সাবেক এই টাইগার অধিনায়ক। মাত্র ১৬ বলে খেলেন ২৮ রানের কার্যকরী এক ইনিংস। সিলেটের পক্ষে নিচের দিকে নেমে জর্জ লিন্ডে এবং থিসারা পেরেরা দুইজনই খেলেন ২১ রানের ক্যামিও ইনিংস।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারিয়ে ফেলে রংপুর। মাত্র ১ রান করে ফেরেন নাঈম শেখের বদলি হিসেবে মাঠে নামা ইংলিশ তারকা ক্রিকেটার স্যাম বিলিংস। এদিন তিনে নেমে ভালো করতে পারেননি আগের ম্যাচে রংপুরকে জেতানো শামীম পাটওয়ারি। মাত্র ১৪ রান করে ক্যাচ তুলে দেন শামীম।
চারে নেমে নিকোলাস পুরান ঝড়ে অবশ্য রংপুর ম্যাচে এগিয়ে যায় দারুণভাবে। শুরুতে মন্থরভাবে রান তোলা রংপুর রান রেট বাড়িয়ে নেয় পুরানের ব্যাটে। মাত্র ১৪ বলে ১টি চার ও ৪টি ছয়ে ৩০ রান করেন পুরান।
এই ক্যারিবিয়ানের বিদায়ের পর অধিনায়ক সোহানকে নিয়ে ৮২ রানের বড় জুটি গড়ে ম্যাচ প্রায় রংপুরের দিকেই টেনে আনেন রনি তালুকদার। কিন্তু অধিনায়ক মাশরাফীর জিয়ন কাঠি এরপর মাঠে এমনভাবেই কাজ করতে থাকে যে, রংপুর মুহূর্তে ম্যাচ থেকেই ছিটকে যায়।
এই ম্যাচে রনি-সোহানের ব্যাটে এক পর্যায়ে ১৭ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান ছিল রংপুরের। শেষ ৩ ওভার থেকে ৭ উইকেটে মাত্র ৩৩ রান লাগতো সোহানদের। যা টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত চিত্র।
কিন্তু মাশরাফী আঠারতম ওভারে তানজিম সাকিবকে আনতেই বদলে যায় চিত্র। সোহানকে ৩৩ রানে ফিরিয়ে ম্যাচ রংপুর থেকে ছিনিয়ে নিতে শুরু করে সিলেট তখন থেকেই। একই ওভারে রান আউটের শিকার হয়ে ফেরেন রনিও।
আউট হওয়ার আগে এই ব্যাটসম্যান করেন ৬৬ রান। এরপর ডোয়াইন ব্রাভো, দাসুন শানাকা, শেখ মাহেদী এসেও রংপুরকে টেনে তুলতে পারেনি।
সিলেটের পক্ষে লুক উড ৪ ওভার থেকে ৩৪ রানের বিনিময়ে নেন ৩ উইকেট নেন। তানজিম সাকিব তো ৪ ওভার থেকে দেন মাত্র ১৯ রান। তুলেও নেন ২ উইকেট। রুবেল হোসেনও নেন ২ উইকেট, কিন্তু খরচ করেন ৪২ রান।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪১:০০ ১৬২ বার পঠিত