নিজ মাঠে ব্রাহিম দিয়াজের একমাত্র গোলে এসি মিলানকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বের শুভ সূচনা করেছে এসি মিলান। সিরি-এ লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা এর মাধ্যমে কোয়ার্টার ফাইনালে পথে এক পা দিয়ে রাখলো।
সান সিরোতে দর্শক ঠাসা শেষ ষোলর প্রথম লেগের ম্যাচে ৭ মিনিটেই দিয়াজের গোলে এগিয়ে যায় সাত বারের ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নরা। এই জয়ের মাধ্যমে আগামী মাসে লন্ডনের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের আগে আত্মবিশ^াসটা নিয়ে রাখলো মিলান।
স্প্যানিশ মিডফিল্ডার দিয়াজের গোলটি ছাড়া পুরো ম্যাচে উভয় দল তেমন একটা সুযোগ তৈরী করতে পারেনি। যদিও দুই দলের জমাট লড়াইয়ে কাল একটি উপভোগ্য ম্যাচই দেখেছে সমর্থকরা। এগিয়ে যাবার পথে দু’দলই সমান তালে লড়াই চালিয়েছে। ম্যাচ শেষে জয়ের নায়ক দিয়াজ বলেছেন, ‘দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে আমি দারুন খুশী। কারন পুরো সপ্তাহ জুড়ে আমরা এই ম্যাচটির জন্য অনেক কষ্ট করেছি। সম্প্রতি আমরা বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এখন আর পিছনে তাকানোর অবকাশ নেই। আমাদের অবশ্যই ফিরে আসতে হবে। এখন আমাদের সিরি-এ শিরোপা ধরে রাখার মিশনে মনোযোগী হতে হবে। একইসাথে লন্ডনের ম্যাচটি নিয়ে পরিকল্পনা সাজাতে হবে।’
২০১৪ সালের পর এই প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে মিলান। গত কয়েক মাসে বাজে কিছু পারফরমেন্সের কারণে সিরি-এ লিগে শিরোপা ধরে রাখাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আটালান্টা ও রোমার সাথে সমান ৪১ পয়েন্ট নিয়ে মিলান বর্তমানে লিগ টেবিলের পঞ্চম স্থানে রয়েছে। কিন্তু ইতালিয়ান জায়ান্টদের সামনে এখন ২০১২ সালের পর প্রথমবারের মত ইউরোপীয়ান সর্বোচ্চ আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার হাতছানি।
এদিকে ইনজুরিতে আক্রান্ত স্পার্সরা কাল অল্পের জন্য জয়ের দেখা পায়নি। এন্টোনিও কন্টের মিলানের ফেরাটাও তাই সুখকর হয়নি। পিত্তথলির অস্ত্রোপচারের কারনে দুই সপ্তাহ পর মিলানের ডাগ আউটে ফিরেছেন কোচ কন্টে। গত সপ্তাহে মধ্যমাঠে রডরিগো বেনটানকার ও ইউভেস বিসুমাকে ইনজুরির কারনে হারিয়ে তরুণ দুই মিডফিল্ডার অলিভার স্কিপ ও পেপ মাটারের ওপরই কন্টেকে আস্থা রাখতে হয়েছে। দলের রেকর্ড গোলদাতা হ্যারি কেনকে কোন বল যোগান দিতে পুরো দলই ব্যর্থ হয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান বাড়ানোর দারুন সুযোগ হাতছাড়া করে মিলান । বদলী খেলোয়াড় চার্লস ডি কেটেলায়েরে ও মালিচ থিয়াও মিলানের ব্যবধান দ্বিগুন করতে ব্যর্থ হন।
মিলান কোচ স্টিফানো পিওলি বলেছেন, ‘আমরা আরো দুটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেছি। কিন্তু ম্যাচটা অনেক কঠিন ছিল। তারা আমাদেরকে সমস্যায় ফেলেছিল। এটা শুধুমাত্র প্রথম লেগের ম্যাচ। দ্বিতীয় লেগ আরো বেশী কঠিন হবে।’
এর আগে সোমবার পিওলি বলেছিলেন ইতালিয়ান দলটি প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটির বিপক্ষে হয়তোবা আর্থিক লড়াইয়ের দিক থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নামতে যাচ্ছে। ৭ মিনিটে থিও হার্নান্দেজের শটটি দারুনভাবে রুখে দেন স্পার্স গোলরক্ষক ফ্রেসার ফর্স্টার। কিন্তু ফিরতি বলে দিয়াজ কোন ভুল করেননি। সং হেয়াং মিনের একটি শট সেভ হবার পর কেন ফিরতি বলের শটটি বারে লাগালে সমতায় ফেরা হয়নি টটেনহ্যামের। যদিও কোরিয়ান তারকার শটটি অফসাইড ছিল বলে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ৭৭ মিনিটে দিয়াজের বদলী হিসেবে ডি কেটেলায়েরে মাঠে নামার আগ পর্যন্ত মিলান আর তেমন কোন ভাল সুযোগ তৈরী করতে পারেনি। বেলজিয়ান এই এ্যাটাকার মাঠে নামার সাথে সাথে ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ পেয়েছিলেন। অলিভার গিরুদের দারুন এক ক্রস থেকে পোস্টের খুব কাছে থেকে ডি কেটেলায়েরের হেড অবশ্য সহজেই রুখে দেন ফর্স্টার। এর কয়েক সেকেন্ড পরেই আরো একটি ভাল সুযোগ হাতছাড়া করেন থিয়াও। রাফায়েল লিয়াওয়ের নিখুঁত ক্রসে থিয়াও মিলানের ব্যবধান বাড়াতে ব্যর্থ হন। ড্যানিশ অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার সাইমন কায়েরের নেতৃত্বে মিলানের শক্তিশালী রক্ষনভাগকে পুরো ম্যাচে ফাঁকি দিতে না পারায় টটেনহ্যামের আর লড়াইয়ে ফেরা হয়নি। মিলানের কাছে কোচ হিসেবে এটি কন্টের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় পরাজয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩০:২৯ ১৭১ বার পঠিত