গাইবান্ধায় প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ৬৫ বছরের বৃদ্ধ

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » গাইবান্ধায় প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ৬৫ বছরের বৃদ্ধ
সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩



গাইবান্ধায় প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ৬৫ বছরের বৃদ্ধ

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার প্রথম শ্রেণির প্রবীণ শিক্ষার্থী আবদুল মান্নান। বয়স ৬৫ বছর। সহায়-সম্বলহীন এক মানুষ। জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন শ্রম বিক্রি করে। এতটা বয়সে এসেও ছুটি মেলেনি তার। স্থানীয় বাজারে ছোট একটি দোকানে বসে পান বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন বয়সের ভারে নুয়ে পড়া মানুষটি।

জীবনের এতটা পথ পেরিয়ে এলেও কখনো সুযোগ ও প্রয়োজন হয়নি লেখাপড়া শেখার। কিন্তু দোকানের হিসাব-নিকাশ তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তাইতো প্রবীণ বয়সে নাতি মাহফুজার রহমানের ছেলে কাওসার আলীর সঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন।

আবদুল মান্নান গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নে কাশিয়াবাড়ী গ্রামের মৃত তছিম উদ্দিনের ছেলে। বর্তমানে তিনি কাশিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ছেন। বই ও খাতা নিয়ে আবদুল মান্নান নিয়মিত নাতির ছেলের হাত ধরে বিদ্যালয়ে যান। সব শিশুর সঙ্গে জাতীয় সংগীত, পিটিসহ সবকিছু করেন। সেখানে শ্রেণিকক্ষ ভর্তি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে লেখাপড়া শিখছেন তিনি। প্রতিদিন সকালে ঘণ্টা বাজার আগেই দোকান বন্ধ করে বিদ্যালয়ে যান। বিদ্যালয় ছুটির পর আবার দোকানে এসে ব্যবসা করেন তিনি।

প্রবীণ বয়সে স্কুলে ভর্তি হওয়া আবদুল মান্নান বলেন, গ্রামের দোকানে মোট বিক্রির অর্ধেকই হয় বাকিতে। মুখে-মুখে এত হিসাব বৃদ্ধ বয়সে মনে রাখা সম্ভব হয় নয়। সেখান থেকেই বাকি লেনদেনের হিসাব লিখে রাখার প্রয়োজন অনুভব করি। বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পেছনে অনেক ঘুরাঘুরি করি। অবশেষে বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরে আমি আনন্দিত।

ভালো কাপড় পরে স্কুলে যাওয়ার সামর্থ্য না থাকা দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত প্রবীণ শিক্ষার্থী আবদুল মান্নান পানের দোকানের আয় দিয়ে পরিবার চালাতে না পারলেও জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত চালিয়ে যেতে চান লেখাপড়া।

দাদুর বয়সি একজন মানুষকে ক্লাসে সহপাঠী হিসেবে পেয়ে খুশি কোমলমতি শিশুরাও। পড়া ও লেখা শিখিয়ে দিচ্ছেন তারাও। অন্য শিশু শিক্ষার্থীর মতো সমান গুরুত্ব দিয়ে বাবার বয়সি শিক্ষার্থীকে পড়ালেখা শেখাচ্ছেন শিক্ষকরাও। শিক্ষক এবং স্থানীয়রা তার এ বয়সে স্কুলে ভর্তি হওয়াকে যাদের সুযোগ-সুবিধা থাকলেও যারা পড়ালেখা করে না তাদের জন্য দেখছেন অনুকরণীয় হিসেবে।

পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ বলেন, বৃদ্ধ বয়সে পড়ালেখা শেখার আগ্রহ এ এলাকার তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করছে। তার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১:২৮:২৫   ১৬৫ বার পঠিত   #  #  #  #  #




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


কুয়াকাটায় প্লাস্টিক দূষনের ভয়াবহতা চরমে
বিনিয়োগ ও বাণিজ্য প্রসারে পর্যটনের অবদান অপরিসীম - হাসান আরিফ
মসজিদে নববীর আদলে গড়ে তোলা হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ - ধর্ম উপদেষ্টা
বাংলাদেশ চোখের সেবা সম্প্রসারণে অরবিসের সাথে কাজ করতে আগ্রহী : অধ্যাপক ইউনূস
এলডিসি দেশগুলোর জন্য ডলার বরাদ্দে ইইউর সমর্থন চাইল বাংলাদেশ
ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে হাব-এর মতবিনিময় সভা
আদানির সঙ্গে আড়াইশ’ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি বাতিল কেনিয়ার
বেনাপোল সীমান্ত থেকে ভারতীয় ফেনসিডিল জব্দ
সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় জড়ানো নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে স্বাগত জানালো আরএসএফ
লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরও ৮২ জন

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ