বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির ঘটনায় চট্টগ্রামে ৪ জলদস্যু আটক

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির ঘটনায় চট্টগ্রামে ৪ জলদস্যু আটক
বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩



বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির ঘটনায় চট্টগ্রামে ৪ জলদস্যু আটক

বরগুনায় গভীর বঙ্গোপসাগরের বয়া নামক এলাকায় মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অভিযান চালিয়ে চার জলদস্যুকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার গণ্ডামারা, বড়ঘোনা, বাংলাবাজার, শৈলকুপাসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আটককরা হলেন- মো. কাইছার ওরফে কালু (২৫), মো. জাহিদ (২৫), মো. সেলিম (৪০) ও মো. ইকবাল হোসেন (১৫)। তাদের সবার বাড়ি বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এ সময় আসামি কাইছারের কাছ থেকে একটি মোবাইল পাওয়া যায়, যেটি আবদুল করিম নামে এক জেলের। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়।

র‍্যাব জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বরগুনার ১৮ জন জেলে একটি ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে রওনা হয়। ওই দিন রাতে পাথরঘাটা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ২৫ থেকে ৩০ জনের একদল জলদস্যু একটি ট্রলারটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় ও ফাঁকা গুলি করে। তখন জেলেরা চিৎকার করলে জলদস্যুরা ট্রলারে উঠে ১৮ জন জেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

জলদস্যুদের কবল থেকে বাঁচতে ৯ জন জেলে গভীর সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিখোঁজ হন। অন্য একটি ট্রলারে জেলেরা জলদস্যুদের হামলায় আহত ৯ জনকে উদ্ধার করে পরদিন সন্ধ্যায় পাথরঘাটায় নিয়ে আসে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত দুজনকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং বাকিদের পাথরঘাটা উপজেলা কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ ৯ জেলের মধ্যে ৪ জনকে সাগর থেকে উদ্ধার করা হয় এবং দুপুরে তাদের পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা। এদিন বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এখনো পাঁচ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে মাঠে নাম্ব র‍্যাব। একপর্যায়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বাঁশখালী থেকে চারজনকে আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কাইছার ও জাহিদ সরাসরি বোটে উপস্থিত থেকে ডাকাতির কাজে অংশ নেয়। সেলিমের ট্রলার দিয়ে ডাকাতি করা হয়। আসামি মো. ইকবাল ট্রলার মালিক সেলিমের ছেলে এবং সে বোটের নিয়ন্ত্রণ এবং তত্ত্বাবধানের জন্য ডাকাতদলের সঙ্গে যায়। এছাড়াও সে অস্ত্র তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করে। একদল অজ্ঞাত ডাকাতদলকে সঙ্গে নিয়ে তারা ১০ ফেব্রুয়ারি ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে ডাকাতির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। প্রথমে তারা কক্সবাজার কুতুবদিয়া চ্যানেল এলাকায় একটি ডাকাতি করে। পরে তারা পুনরায় ডাকাতির উদ্দেশ্যে বরগুনা-পটুয়াখালি চ্যানেলের দিকে রওনা করে এবং সবশেষ ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত করে।

চট্টগ্রাম র‍্যাবের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, আটককরা আগে বাঁশখালী, পেকুয়া, মগনামা এবং কুতুবদিয়া এলাকার উপকূলীয় অঞ্চলে ডাকাতি করত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে তারা বর্তমানে এই এলাকা ছেড়ে বরিশাল, বরগুনা এবং খুলনা উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থান করে ডাকাতি কার্যক্রম শুরু করেছে। ওই অঞ্চলে লুণ্ঠিত মালামাল তারা কক্সবাজার নিয়ে বিক্রি করতেন। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:০২:৩৫   ১৯২ বার পঠিত