গত কয়েক দিন ধরে রাজনীতিতে আলোচনার প্রধান ইস্যু বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গ। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও ভিন্নভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বাংদেশের আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নির্বাচনের করতে পারবেন না।’ খালেদা জিয়ার দল অংশ নিতে পারবে, তার নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই।
রবিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ভারত, নেপাল, ভুটান, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি ও কানাডার প্রতিনিধিদের সমন্বিত ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
দুই বছরের বেশি সময় কেউ শাস্তিপ্রাপ্ত হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার নির্বাচনে আসার প্রশ্নই আসে না। বাংলাদেশের আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে দুই বছরের বেশি সময় যদি কেউ শাস্তিপ্রাপ্ত হয় তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। বাংলাদেশে ইতোপূর্বে যারা দুই বছর সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে, তারা কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়ার দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা বিএনপির বড় মাথা ব্যথা। কারণ তাদের দল পরিচালনা করেন তারেক রহমান। কিন্তু তাদের নেতারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে নেতা হোক তিনি চান কিনা এটা এখন বড় প্রশ্ন?’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চায় সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। বিএনপির একটা নির্বাচনী ভীতি তৈরি হয়েছে। ভীতি হওয়াটা স্বাভাবিক, কারণ ২০০৮ সালে তারা পূর্ণশক্তি দিয়ে নির্বাচন করেছিল। কিন্তু তারা ২৯টি সিট পেয়েছিল। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য চেষ্টা করেছিল কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। মূলত তারা গণতন্ত্রকে প্রতিহত করতে চেয়েছিল কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।’
বিএনপির ২০১৮ সালের ডান-বাম, ‘অতিডান’সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিয়ে নতুন করে ঐক্য গঠনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা ব্যর্থ হয়েছে। সেই নির্বাচনেও হাতে গোণা কয়েকটি সিট পেয়েছিল। এখন আবার নতুন করে তারা ঐক্য করেছে। তারা যখন প্রেসক্লাবে সমাবেশ করে তখন তাদের নেতাকর্মীর চেয়ে সাংবাদিক বেশি থাকে। সেজন্য বিএনপিকে নির্বাচনের ভীতি পেয়ে বসেছে। তারপর আমরা চাই সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন এবং জনগণ ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচন করুক। এসব বিষয়ে তাদেরকে আমরা জানিয়েছি।’
তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি সব দলের অংশগ্রহণে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা দেখতে চাই। জনগণের ভোটের মাধ্যমে আগামী দিনের সরকার গঠিত হবে। এই নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণ আমরা চাই।’
‘আমরা আরও বলেছি পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আমাদের দেশেও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারত, অস্ট্রেলিয়া জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং কন্টিনেন্টাল ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে যেভাবে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে আমাদের সরকারও সেভাবে দায়িত্ব পালন করবে। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে এসব বিষয় তাদেরকে আমরা জানিয়েছি। তারা বলেছে, নির্বাচনের সময় তারা নির্বাচন মনিটরিং করবে, আমরা বলেছি এতে যদি সরকারের কোনো সহযোগিতা লাগে আমরা করব। তারা বলেছে, গত নির্বাচনেও তারা মনিটরিং করেছে, আগামী নির্বাচনেও অবজারভেশন করার জন্য তাদের প্রতিনিধি পাঠাবে।’
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৩:১৮ ২১৬ বার পঠিত