তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এমপি বলেছেন, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, বঙ্গবন্ধুর এই অমিয় বাণীই বাংলাদেশের আজকের এই উন্নয়নের সাফল্যগাঁথা। ৪র্থ শিল্পবিল্পবের এই সময়ে বৈশি^ক অর্থনীতিতে মোবাইল অ্যাপ ও গেইম ইন্ডাস্ট্রি বিশাল অবদান রাখছে।
আজ শনিবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) মোবাইল এপ্লিকেশন ও গেইম শিল্পে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং এই খাতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের লক্ষ্যে সরকারের আইসিটি বিভাগের স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর মোবাইল গেইম এন্ড অ্যাপস প্রজেক্টের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মোবাইল অ্যাপ, গেইম এবং জব ফেস্টিভ্যাল-২০২৩’ বিষয়ক দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত উক্ত উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী ও ফারাজ করিম চৌধুরী, আইসিটি বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন, চুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মোকাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইসিটি বিভাগের মোবাইল গেইম ও অ্যাপস শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চুয়েটের সিএসই বিভাগের প্রভাষক মৌমিতা সেন শর্মা ও সাদমান সাকিব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আমাদের বর্তমান রপ্তানি আয় প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার। ২০২৫ সালের মধ্যে সেটা ৫ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিশ^ বাজারের উপযোগী করে মোবাইল অ্যাপ ও গেইম ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলতে হবে। বর্তমানে দেশের ৮টি বিশ^বিদ্যালয়ে অ্যাপ ডেভেলপার তৈরির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। চুয়েটের এই ধরনের ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মাঝে উদ্যোক্তা মনোভাব ছড়িয়ে দিতে চাই। দেশের অর্থনীতিতেও মোবাইল অ্যাপ ও গেইম ইন্ডাস্ট্রি অবদান রাখবে বলে আমরা বিশ^াস করি।’
চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘মোবাইল অ্যাপস ও গেইম এখন বিশ^ব্যাপী একটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অন্যতম শিল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দেশের অর্থনীতিতে ও মোবাইল অ্যাপস ও গেইম হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ খাত। সরকার এ খাতকে গুরুত্ব দিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা মেধা এবং সৃজনশীলতার প্রয়োগ ঘটিয়ে মোবাইল অ্যাপস ও গেইম তৈরিতে এগিয়ে আসলে নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব।’
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় ‘স্মার্ট ক্যারিয়ার উইথ অ্যাপ অ্যান্ড গেইম’, ‘দ্য রাইজ অব এনিমেশন : এক্সপ্লোরিং দ্য ক্যারিয়ার’, ‘পিপল, ট্রেনিং অ্যান্ড টেকনোলজি’, ‘এনিমেশন মুভি স্ক্রিনিং’ এবং ‘প্রেজেন্টেশন অন শর্ট লিস্টেড গেইম এন্ড অ্যাপ’ শীর্ষক পৃথক পাঁচটি সেশন পরিচালিত হয়। সেশনসমূহে বর্তমান বিশ^বাজারের চাহিদা উপযোগী বিভিন্ন ধরনের মোবাইল অ্যাপ ও গেইম তৈরির লক্ষ্যে তরুণ প্রযুক্তিবিদ ও শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মোবাইল অ্যাপস এবং গেইম বিষয়ক দুই শতাধিক আইডিয়া নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে বাছাইকৃত তিনটি আইডিয়াকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া জব ফেস্টিভ্যালে দেশের স্বনামধন্য ২০টি আইটি ও সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। যেখানে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপস, গেইম ও আইডিয়া নিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করেন প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের জন্য ছিল আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্র।
উৎসবে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ প্রায় এক হাজার লোক যোগ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫৫:৪৪ ১৫৯ বার পঠিত