রাজধানীর বহুতল ভবনে একের পর এক বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসিকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। শীতকালে অচল থাকার পর গরমের শুরুতে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না করে চালানোর কারণেই বিস্ফোরণ ঘটছে বলে মত দেন তারা। দুর্ঘটনা এড়াতে বছরে অন্তত তিনবার এবং বিশেষভাবে শীতকালের শেষে এসির মেইনটেনেন্সের তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা
গুলশান, মৌচাক, সায়েন্স ল্যাব, কালশী এবং সবশেষ সিদ্দিকবাজার। রাজধানীতে গত দুই সপ্তাহে অন্তত ৫টি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শীতকালের শেষে প্রতিবছরই এমন ঘটনা লক্ষ করা যায় রাজধানীর আবাসিক থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক বহুতল ভবনগুলোতে।
এসব অগ্নিকাণ্ড বা বিস্ফোরণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি থেকে হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা দেয় ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শীতকালে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গরমের শুরুতে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই ব্যবহারের কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন সেলিম বলেন, এসির সার্ভিসিং নিয়মিত করা হয় না। ফলে এসির পাইপলাইন এবং গ্যাস সিলিন্ডারে ব্লক তৈরি হয়। এতে গ্যাস প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয় এবং একটা পর্যায়ে বিস্ফোরণ ঘটে।
তিনি বলেন, ‘দু-তিন মাস না চালানোর কারণে লিকুইড বাষ্প হয়ে যায়। সেই অবস্থায় এসির কার্যক্রম হলে কম্প্রেসারে বেশি চাপ পড়ে। এখান থেকে বিস্ফোরণ হতে পারে।’
তাই দুর্ঘটনা এড়াতে বছরে অন্তত তিনবার এবং বিশেষভাবে শীতকালের শেষে এসির মেইনটেনেন্স করার দিকে তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়াও নিম্নমানের গ্যাস পরিহার করাসহ যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা নিয়ে গ্রাহকদের এসি বসানোর দিকে নজর রাখার পরামর্শ তাদের।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বিশেষজ্ঞ মহিউদ্দিন পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ধুলাবালি কম, এমন জায়গায় এসি বসানো ভালো। বছরে অন্তত তিনবার এসি পরিষ্কার করা উচিত। তাহলে বিস্ফোরণের ঝুঁকি অনেকটা কমে যাবে।’
এ ছাড়া একেকটি এসি বসাতে ভবনের বাইরে যে পরিমাণ জায়গা দরকার, সেই পরিমাণ জায়গা দেয়া হচ্ছে না। একটা মেশিনের গরম আরেকটা মেশিনে ছড়িয়ে পড়ছে, যেখান থেকে বিস্ফোরণ হচ্ছে বলেও জানান মহিউদ্দিন।
একেকটি এক টন এসি ১৫০ স্কয়ার ফুটের বেশি জায়গায় যেন চালানো না হয়, সে বিষয়েও পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১৪:২৬ ১৯২ বার পঠিত #বিস্ফোরণ #রাজধানীতে