মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশের যে সকল স্থানে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল সে সকল স্থানে স্মৃতি ফলক নির্মানের দাবী জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
তারা বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যে সকল স্থানে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন, যারা সেই প্রতিরোধ গড়তে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, সেই সকল স্থানে তাদের নামসহ স্মৃতি ফলক গড়ে তুলতে হবে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘প্রতিরোধের প্রথম ব্যারিকেড: বাঙালির বীরত্বের গৌরবগাথা’ শিরোনামে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড উদযাপন জাতীয় কমিটি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
জাতীয় কমিটির সভাপতি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামালের সভাপতিত্বে সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুর রহমান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব:) হেলাল মোর্শেদ বীরবিক্রম, তেজগাঁও কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্রী জোয়ারিয়া ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির জন্য ঐতিহাসিক বিষয়। আমার আবেদন হচ্ছে ফার্মগেটের যেখানে যেখানে যুদ্ধ হয়েছে সেখানে স্মৃতি ফলক তৈরি করা উচিত। একই সাথে দেশের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যে সকল স্থানে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল সেই সকল স্থানে স্মৃতিফলক নির্মানের দাবী জানান তিনি।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ফার্মগেটে ছাত্র জনতা নিয়ে আসাদুজ্জামান খানের নেতৃত্বে তৎকালীন যুবকরা পাকিস্তানিদের বাধা দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল। ২৫ শে মার্চ, ১৯৭১ সালে কালরাতে যদি পাকিস্তানিরা এভাবে ব্যারিকেডের সম্মুখীন না হতো তাহলে তারা আরও বেশি হত্যাযজ্ঞ চালাত।
নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে জানিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, জাতির পিতার নাম যত মুছে ফেলতে চাইছে ততই তা উজ্জ্বল হচ্ছে। যতদিন যাবে ততই উজ্জ্বল হবে।
মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন ২৫শে মার্চ কালরাতে ইতিহাসের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞ চালাতে বের হয়েছিল তখন তারা অনেকগুলো ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়েছিল। এগুলোর মধ্যে প্রথম এবং অন্যতম ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয় ফার্মগেটে আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে। এই ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখতে ফার্মগেটে একটি স্মৃতি ফলক স্থাপন করা উচিত। এ সময়ে তিনি ফার্মগেটে একটি স্মৃতি ফলক স্থাপনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহবান জানান।
আসাদুজ্জামান খান কামাল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে ফার্মগেটে প্রথম ব্যারিকেড কিভাবে দিয়েছিলেন তার বর্ণনা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জামান খান কামাল রচিত ‘বঙ্গবন্ধুর পথনির্দেশনার বাংলাদেশ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। আসাদুজ্জামান খান কামালের লেখা বঙ্গবন্ধুর পথনির্দেশনার বাংলাদেশ গ্রন্থটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনার দক্ষতা ও দূরদর্শিতা এবং লেখকের নিজস্ব অভিজ্ঞতা (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা) তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৭:০৩ ১৬৫ বার পঠিত