সিলেটে সিশেলসের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি ম্যাচটিতে জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ঘরের মাঠে ১-০ গোলে জয়ের দিনে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল সাক্ষী হয়েছে এক বিরল ঘটনার। দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ন্যাচারালাইজ (নাগরিকত্ব গ্রহণ করা) ফুটবলার হিসেবে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয়েছে নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত এলিটা কিংসলের। অন্যদিকে সিশেলসের একাদশেও ছিল দারুণ এক চমক।
সিশেলসের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটাকে নানা কারণেই স্পেশাল বলা চলে। দীর্ঘদিন এদেশের ঘরোয়া ফুটবল মাতান এলিটা কিংসলে অবশেষে প্রথমবার বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠে নামলেন এদিন। বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমেই দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে এক নতুন যুগের সূচনা করলেন।
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে এর আগে কখনোই কোনো বিদেশি ফুটবলারকে কোনো জাতীয় দলে দেখা যায়নি। বাংলাদেশের জার্সিতে খেলা জামাল ভূঁইয়া, তারিক কাজীদের বেড়ে ওঠাটা বিদেশের মাটিতে হলেও তাদের শরীরে বইছে বাংলাদেশি রক্তই। কিন্তু নাইজেরিয়ায় জন্ম নেওয়া এলিটার বাবা-মা কারো সঙ্গেই নেই বাংলাদেশের কোনো যোগসূত্র।
এদিন ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন ফিনল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ডিফেন্ডার তারিক কাজী। ফিনল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ২২ বছর বয়সী তারিকের শরীরে অবশ্য বাংলাদেশি রক্তই বইছে।
সিলেটের মাঠে এদিন চমক ছিল আরও। সিশেলসের জার্সিতে এদিন বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন ইংল্যান্ড জাতীয় দলে ডাক পাওয়া চেলসির সাবেক এক খেলোয়াড়।
সিশেলসের হয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম একাদশে ছিলেন চেলসির সাবেক সেন্টার ব্যাক ৩৫ বছর বয়সী মিকায়েল ম্যানসিয়েন্নের। শুধু তাই নয়, ২০০৮ সালে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে জার্মানির সাথে প্রীতি ম্যাচে ডাক পেয়েছিলেন তিনি।
ইংল্যান্ডের ফেল্টহামে জন্ম নেওয়া ম্যানসিয়েন্নে বর্তমানে খেলেন ইংলিশ ফুটবলের তৃতীয় বিভাগের (লিগ ওয়ান) দল বার্টন অ্যালবিয়নের হয়ে। ৩৫ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার ২০০৬ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত খেলেছেন প্রিমিয়ার লিগের দল চেলসির হয়ে। এ সময়ে ক্লাবটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগে ৪টি ম্যাচ খেলেন। এ সময়ে বিভিন্ন দফায় কুইন্সপার্ক রেঞ্জার্স ও উলভারহ্যাম্পটনের মতো ক্লাবের হয়েও খেলেন তিনি। রেঞ্জার্সের হয়ে লিগে ৫৮টি ও উলভারহ্যাম্পটনের হয়ে দুই দফায় ৫৬টি ম্যাচ খেলেন তিনি। খেলেছেন বুন্দেসলিগার দল হ্যামবার্গার এসভির হয়েও।
শুধু তাই নয়, জন্মভূমি ইংল্যান্ডের হয়ে বয়সভিত্তিক ফুটবলেও অংশ নিয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব ১৬ থেকে অনূর্ধ্ব ২১ দল পর্যন্ত নিয়মিত খেলা এই ডিফেন্ডার ডাক পেয়েছিলেন ইংল্যান্ড জাতীয় দলেও। ২০০৮ সালে ইংল্যান্ডের তৎকালীন কোচ ফ্যাবিও ক্যাপেলো জার্মানির বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের দলে ডাকেন তাকে। বার্লিনের সেই ম্যাচে অবশ্য মাঠে নামার সুযোগ পাননি তিনি।
২০২২ সালে সিশেলসের হয়ে অভিষেক হয় ম্যানসিয়েন্নের। মূলত পিতার সূত্র ধরেই সিশেলসের হয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন তিনি। তার পিতা মাইকেল সিনিয়র সিশেলস জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন এক সময়। বোতসোয়ানার বিপক্ষে অভিষেকের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে এদিন চতুর্থবারের মতো তিনি পিতার দেশের জার্সি গায়ে চড়ালেন। সিশেলসের হয়ে চার নম্বর জার্সি গায়ে এদিন মাঠে ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ৪:৪০:১৩ ১৫৩ বার পঠিত