ঝালকাঠির শহরে বেড়েছে সিঁধেল চোর আতঙ্ক। রাতে সিঁধ কেটে মুখোশধারী চোর ঘরে ঢোকে রূপ নেয় ডাকাতের। বাড়ির সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুট করে নিয়ে যায় গবাধিপশুসহ টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার। এতে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জেলা সদরের নুরুল্লাহপুর গ্রামের গৃহবধূ মাকসুদা বেগম এখনও স্বাভাবিক হতে পারেননি। গত ২৬ মার্চ সিঁধ কেটে তার ঘরে ঢোকে একদল মুখোশধারী। বিষয়টি টের পেলে মাকসুদা ও তার শিশু ছেলের গলায় ধারালো অস্ত্র ধরে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা নিয়ে যায় স্বার্ণালংকার ও মোবাইল ফোন। সেই ভয় এখনও তাড়া করে বেড়ায় মাকসুদাকে।
গৃহবধূ মাকিসুদা বলেন, তারাবির নামাজ পড়তে যখন ঘরের পুরুষরা মসজিদে যান তখনই সিঁধ কেটে মুখোশধারী চোর ঘরে ঢোকে। আমার ও ছেলের গলায় ধারালো দা ধরলে আমরা ভয়ে কাঁপতে থাকি। পরে ওরা (চোর) কানে থাকা সোনার দুল, মোবাইল ও টাকা-পয়সা নিয়ে যায়। সেই আতঙ্ক এখনও তাড়া করে বেড়ায়, বলেন মাকসুদা বেগম।
এর দুদিন আগে চুরি হয় বাড়ইকরণ গ্রামের তীথি সাহার বাড়িতে। তিনি জানান, এক দুর্বৃত্ত গলায় থাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে টানাটানি করলে আহত হন তিনি। এ পরিবারটির চোখেও এখন ঘুম নেই। তাদেরও এখন প্রতিটি সন্ধ্যা নামে চোর-ডাকাতের আতঙ্ক নিয়ে। কেবল এই দুই গ্রামেই নয় চোর ডাকাতের আতঙ্ক এখন জেলাজুড়ে।
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে রাজাপুর উপজেলায় গভীর রাতে সব মসজিদে মাইকিং করে ডাকাত পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। অনেক স্থানেই এলাকাবাসী রাতে পাহারা বসিয়েছে। কিন্তু এরপরও থেমে নেই চুরি কিংবা ডাকাতি। জেলার দুর্গম ও নদী পাড়ের এলাকাগুলোতে বেড়েই চলছে চুরি-ডাকাতির ভয়।
দুর্গম এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পাশাপাশি টহল পুলিশ জোরদার করা হলে চোর-ডাকাতের হাত থেকে রেহাই মিলবে।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়ে কয়েকজন সিঁধেল চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর দুর্গম এলাকাগুলোতে টহল পুলিশের পাশাপাশি কমিউটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে বিশেষ পাহারা বসানো হচ্ছে।
পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে জেলায় চুরি, ডাকাতি ও দস্যুতার অভিযোগে ১৫টি মামলা হয়েছে। তবে জেলাজুড়ে এ সব অপরাধের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে স্থানীয়দের দাবি।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১৮:০৫ ১২৮ বার পঠিত