আগামী ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। পহেলা বৈশাখ উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক কর্মসূচি। দিনটি হবে সরকারি ছুটির দিন।
সোমবার (১০ এপ্রিল) মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচির কথা জানানো হয়।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। রমনার বটমূলে থাকছে ছায়ানটের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ঢাবির থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দিবসটি উদ্যাপন করবে। ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করবে। বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান শুরু হবে জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ গান পরিবেশনের মাধ্যমে।
বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস তুলে ধরে এদিন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে এবং দেশের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বৈশাখি শোভাযাত্রা আয়োজন করা হবে।
স্থানীয় প্রশাসন রচনা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকজ মেলার আয়োজন করবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দিনব্যাপী জমকালো অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন নিজ প্রাঙ্গণে নববর্ষ মেলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদফতর, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, কপিরাইট অফিস ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আলোচনা সভা, প্রদর্শনী, কুইজ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট/একাডেমিগুলো তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
এদিন সব কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার ও ইফতারের আয়োজন করা হবে। শিশু পরিবারের শিশুদের নিয়ে ও কারাবন্দিদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে এবং কয়েদিদের তৈরি বিভিন্ন দ্রব্যাদি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে জাদুঘর ও প্রত্নস্থান। শিশু-কিশোর, ছাত্রছাত্রী, প্রতিবন্ধী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের বিনা টিকিটে প্রবেশের সুযোগ থাকবে। বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে জাদুঘরে।
তথ্য বিবরণীতে আরও জানানো হয়েছে, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ও যথাযথ আড়ম্বরে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করা হবে। নববর্ষের সকালে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বৈশাখি র্যালির আয়োজন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে।
অভিজাত হোটেল ও ক্লাব বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ও ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার/ইফতারের আয়োজন করবে। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ উদ্যাপন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র, ঢাকা ওয়াসার পক্ষ থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্থাপন করা হবে।
এতে আরও বলা হয়, সব সরকারি-বেসরকারি টিভি, বাংলাদেশ বেতার, এফএম ও কমিউনিটি রেডিও বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে স্ব-উদ্যোগে বাংলা নববর্ষের ওপর বিশেষ অনুষ্ঠানমালা/সম্পাদকীয়/নিবন্ধ ইত্যাদি প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি চ্যানেলসমূহ রমনা বটমূলে ছায়ানট আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে। বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান প্রচারের বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বাংলা নববর্ষ সম্পর্কে অপপ্রচার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ উদ্যাপনকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বর্ষবরণ উপলক্ষে গত ২০ মার্চ সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩০:৫২ ১৫৯ বার পঠিত