ইটভাটার সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মেশিনে জ্বালানি ও মাটির ব্যবহার ছাড়াই তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক ইট। এতে উর্বর জমি রক্ষা পাবে এবং বায়ুদূষণও হবে না।
সরেজমিনে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার বেকীপুল এলাকায় গিয়ে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে। সেখানে পরিবেশবান্ধব ও জমির মূল্যবান মাটি নষ্ট না করেই জার্মান প্রযুক্তিতে আগুনে না পুড়িয়ে, পাথর গুঁড়া ও সিমেন্ট দিয়ে অত্যাধুনিক ব্লক ইট তৈরি হচ্ছে। শ্রমিকরা কারখানার পাশে স্তূপ করা পাথর, সিমেন্ট, সিলেকশন সেন্ড ট্রলিতে এনে হপারে ঢেলে দেন। পরে মিক্সার মেশিনে অন্যান্য উপকরণ মিশ্রিত করে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে ভাইব্রো মাল্টি ক্যাভিটি মোল্ডিং মেশিনের মাধ্যমে তৈরি করা হয় এই ইট। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে সারি সারিভাবে মেশিন থেকে বেরিয়ে আসে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট। এ অত্যাধুনিক ইট কিনতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন অনেকে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইটের চেয়ে টেকসই, শক্তিশালী কংক্রিট ইট। চিরিরবন্দর উপজেলার বেকীপুল এলাকায় গড়ে উঠেছে গ্রিন ল্যান্ড অ্যান্ড টাইলস কারখানা। জ্বালানি ও মাটির ব্যবহার ছাড়াই, ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে বড়পুকুরিয়া খনির পাথর, পঞ্চগড়ের নুড়ি পাথর, পাথরের গুঁড়া, সিলেকশন সেন্ড, সিমেন্টসহ বেশকিছু উপকরণ দিয়ে।
চিরিরবন্দরের গ্রিন ল্যান্ড অ্যান্ড টাইলসের উদ্যোক্তা রফিকুল বলেন, এই ইটে ভবন নির্মাণ করলে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় সাশ্রয়ী হবে; যা সচরাচর মাটি দিয়ে তৈরি ইটে সম্ভব না।
জেলা হোমপ্লান পরিচালক প্রকৌশলী দেবাশীষ ভট্টাচার্য জানান, ইটভাটার পরিবেশের জন্য হুমকি। তবে মেশিনের তৈরি কংক্রিটের ব্লকে ভবন টেকসই ও পরিবেশবান্ধব হয়। এটা ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগ সহনীয়, সর্বোপরি ব্যয় সাশ্রয়ী বলেও মনে করেন তিনি।
জেলা পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ছামিউল আলম কুরসী জানান, মাটির তৈরি পোড়া ইটের বিকল্প হিসেবে কংক্রিটের ইট কৃষিবান্ধব, পরিবেশবান্ধব।
গ্রিন ল্যান্ড অ্যান্ড টাইলস কারখানায় কংক্রিট ইট ছাড়াও সেখানে তৈরি হয় ব্লক, ইউনি পেভার ও পার্কিং টাইলস। এই কারখানায় প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার কংক্রিটের ইট তৈরি হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২:১৫:৩০ ১৫৮ বার পঠিত