ইসমাইল হোসেন, জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে সরিষাবাড়ীতে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির আওতায় (২০২৩-২৪) চক্রের কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, পাঁচ হতে দশ হাজার টাকার বিনিময়ে এ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। অনেকে আবার টাকা দিয়েও মেলেনি কার্ড এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।
উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কান্দারপাড়া,তারাকান্দি,পলিশা ও চরপাড়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, অত্র ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আফজাল হোসেন ৪৭ জন অসচ্ছল, বিধবা ও তালাকপ্রাপ্ত নারীর কাছ থেকে(ভিডব্লিউবি) অর্থাৎ ভিজিডি কার্ড দেওয়া কথা বলে ৫ হতে ১০ হাজার করে টাকা উৎকোচ নিয়েছে। যা সম্পূর্ণ অনিয়ম ও অবৈধ বলে জানিয়েছেন এ প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষৎ সূত্রে জানা গেছে, এবারের (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচিতে পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদ বরাদ্দ পেয়েছে ৪৪৭টি কার্ড। ত মধ্যে ইউপি সদস্য আফজাল হোসেন কার্ড বরাদ্দ পেয়েছেন ১২টি। তিনি ওই ১২টি কার্ডের নাম ভাঙিয়ে অত্র ওয়ার্ড হতে শিরীন ও বিউটি নামে দুই নারীকে দিয়ে ৪৭জন দুঃস্থ অসহায় মহিলার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে টাকা উৎকোচ হিসেবে গ্রহণ করে। যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অবগত নন বলে জানান।
এদিকে গত ১০ ও ১১ এপ্রিল সকাল হতে (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচি আওতায় উপকারভোগীদের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা শুরু করে পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদ। এ সংবাদ পেয়ে ইউপি সদস্য আফজাল হোসেন এর বাড়ীতে যায় ওই সকল নতুন কার্ডধারী নারীরা। গিয়ে জানতে পারে তাদের কার্ড হয়নি এবং যাদের কার্ড হয়েছে, তাদের কাছে আরো ৫ হাজার করে টাকা দাবি করে মেম্বার আফজাল হোসেন। পরে অতিরিক্ত টাকা দিতে না পেরে নিরুপায় হয়ে কার্ড রেখেই হতাশা চিত্তে বাড়ি ফিরে আসে কার্ড প্রত্যাশী নারীরা।
পরে বিষয়টি এলাকার মধ্যে জানাজানি হলে আফজাল মেম্বারসহ তার সহযোগীরা ভুক্তভোগীদের গালিগালাজ করে এবং কার্ড বাতিলের হুমকি দেয়।
এদিকে ভুক্তভোগী নারী ফিরোজা বেগম, রুমি আক্তার, রেহানা বেগম, রাবেয়া খাতুন ও মরিয়ম বেওয়া জানান, তাদের অনেকের স্বামী নেই তারা বিধবা। যাদের স্বামী আছে তারা কেউ ভ্যান চালক, কেউ দিনমজুর। তারা কিভাবে এতো টাকা দিয়ে কার্ড নিবে। পূর্বে যে টাকা দিয়েছে সেটাই তারা সুদের উপর ঋণ করে দিয়েছে বলে জানান।
এবিষয়ে পোগলদিঘা ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক বলেন, যদি কোন ইউপি সদস্য (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির কার্ড টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে থাকে। তাহলে পর্ষদের আইন অনুযায়ী ওই সদস্যের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শায়লা নাজনীন জানান,ভিডব্লিউবি কর্মসূচি গ্রামীণ দুস্থ নারীদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকারের একটি বৃহত্তর সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি।
এ কর্মসূচিতে নারীদের খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা, পুষ্টিহীনতা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা দূর করে আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এ কার্ডটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতরণ করার নিয়ম। যারা অর্থের বিনিময়ে কার্ডটি বিক্রি করেছেন। তারা অন্যায় করেছেন। এ বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাবো ।
বাংলাদেশ সময়: ২২:২৫:৪০ ২২৮ বার পঠিত