ঢাকায় ইদানীং চুরির ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন কনা নামে এক নারী। তিনি খাবারে গুল মিশিয়ে বাসার সবাইকে অচেতন করে চুরি করতেন বলে স্বীকার করেছেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবিপ্রধান) মো. হারুন অর রশিদ সময় সংবাদকে সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা যায়, বাসাবাড়িতে ছুটা বুয়া হিসেবে কাজ নেন তিনি। এরপর টার্গেট কীভাবে চুরি করবে সেই পরিকল্পনা করতে থাকেন বাসায় কাজ নেয়া বুয়া কনা নামের ওই নারী। একটি বাসায় চার পাঁচ দিন কাজ করার পর সুযোগ বুঝে সব চুরি করে পালিয়ে যেতেন তিনি।
অভিনেত্রী মনিরা আক্তার মিঠুর বাসায় চুরির রহস্য উদ্ঘাটন করতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ বিলকিছ বেগম ওরফে কনা নামের এক চোরকে আটক করেছে।
রাস্তায় থাকা সিসি ক্যামেরা ফুটেজে ধরা পড়ে, একটি বাসা থেকে চুরি করে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায় এক নারী চোরকে। আর চোরের পেছনে ছুটতে দেখা যায় ভুক্তভোগী পরিবারের একজনকে।
চলতি মাসের গত ২ এপ্রিল রাজধানীর উত্তরায় অভিনেত্রী মনিরা আক্তার মিঠুর বাসায় এ চুরির ঘটনা ঘটে। গৃহকর্মী নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং প্রায় চার লাখ টাকার গহনা চুরি করে পালিয়ে যান গৃহকর্মীর কাজ নেয়া কনা, যা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে।
চুরির আগের দিন ডালের সঙ্গে গুল মিশিয়ে বাসার সবাইকে খাওয়ানো হয়। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় সবাইকে। তবে অভিনেত্রী মনিরা আক্তার মিঠুর সেটি না খাওয়ায় এ যাত্রায় রক্ষা পান তিনি।
সময় সংবাদকে মিঠু জানান, আমি অসুস্থ হয়নি কারণ গুল দিয়ে বানানো ওই পেঁয়াজুর ডালটা আমি খায়নি, আমার ছোট ছেলে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি বাসায় ছিলাম না। পরের দিন বুয়া কনা এসে আলমিরার সব ড্রয়ার ছুরি দিয়ে ভেঙে ফেলে, ওই সময় আমার ছোট ছেলে বাথরুমে ছিল। আলমিরা ভেঙে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করে অভিযুক্ত গৃহকর্মীকে। সঙ্গে আরও দুজনকে। চুরিকৃত স্বর্ণালংকার তিনি বিক্রি করে দিয়েছিলেন রবিউল আর বাপ্পীর কাছে বলে জানান কনা।
মো. হারুন অর রশিদ বলেন, গৃহকর্মী কনার এখন পর্যন্ত তিনটি নাম পাওয়া গেছে। তার মূল পেশা চুরি। এর আগেও অনেক বাসায় চুরির কথা সে স্বীকার করেছে।
তিনি আরও বলেন, কনাকে ধরার পর জানতে পেরেছি যে, ভাটারা থানাতে রোজিনা নাম ধারণ করে, শেরেবাংলা নগরে বিলকিছ নাম ধারণ করে সে ছুটা বুয়ার কাজ নিয়েছিল। সেখানেও ৫ থেকে ৬ দিনের মাথায় চুরি করে ধরা খেয়েছিল। মূলত তিনি পেশাদার চোর। তার কাজই হচ্ছে বাসার মানুষকে অজ্ঞান করে সবকিছু নিয়ে যাওয়া।
বাসায় কাজের লোক নিয়োগ দেয়ার আগে যাচাই-বাছাই করার পরামর্শ দিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, বাসার কাজের জন্য বুয়া নেয়ার আগে অবশ্যই এনআইডি ও তার বর্তমান ছবি তুলে রাখতে হবে। সঠিক ঠিকানা যাচাই-বাছাই করেই অবশ্যই কাজের মানুষ নিয়োগ দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০৯:৫৫ ১৩১ বার পঠিত