সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী
রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩



সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

বরেণ্য অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক, ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল না ফেরার দেশে পাড়ি জমান খ্যাতিমান এই কৃতী।

আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট ও ঢাকায় বিভিন্ন সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এছাড়াও সিলেটে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সকালে মরহুমের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি বর্তমান সিলেট শহরের ধোপাদিঘির পাড়ে পৈতৃক বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা অ্যাডভোকেট আবু আহমদ আবদুল হাফিজ ছিলেন তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের নেতা। মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ছিলেন সিলেট মহিলা মুসলিম লীগের সহ-সভানেত্রী।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে আবুল মাল আবদুল মুহিত যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করেন এবং সেখানে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

জাতীয় সংসদে সর্বোচ্চ ১২ বার বাজেট দেওয়া সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ছিলেন সিলেট-১ আসনের সাংসদ। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আবুল মাল আবদুল মুহিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সলিমুল্লাহ হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। সক্রিয় ছিলেন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনেও।

১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে (সিএসপি) যোগ দেওয়ার পর মুহিত তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার, পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশের পরিকল্পনা সচিব নিযুক্ত হন।

তবে এই দায়িত্ব গ্রহণ না করে তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করে ওয়াশিংটন দূতাবাসে ইকোনোমিক মিনিস্টারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকে নির্বাহী পরিচালক পদে নিযুক্ত হন।

১৯৭৭ সালে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগে সচিব পদে নিযুক্ত হন। ১৯৮১ সালে চাকরির ২৫ বছর পূর্তিকালে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে তিনি স্বেচ্ছায় সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন।

আবদুল মুহিত পাকিস্তান পরিকল্পনা কমিশনের চিফ ও উপ-সচিব থাকাকালে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্যের ওপর ১৯৬৬ সালে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করেন। পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে এটিই ছিল এই বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন।

ওয়াশিংটন দূতাবাসের তিনি প্রথম কূটনীতিবিদ, যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১-এর জুন মাসে পাকিস্তানের পক্ষ পরিত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষে আনুগত্য প্রদর্শন করেন।

১৯৮২-৮৩ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের উড্রো উইলসন স্কুলের ভিজিটিং ফেলো ছিলেন।

২০০১ সালের আগস্টে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরাসরি যোগ দেন এবং অক্টোবরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।

২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নিযুক্ত হন। ২০০৯ সালে সিলেট-১ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। ১০ বছর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বিদায় নেন।

২০১৪ সালে সিলেট-১ আসন থেকে টানা দ্বিতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আবারও অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। দক্ষতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে আর নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেন।

অবসর নিয়েও মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। একজন লেখক হিসেবেও মুহিত খ্যাতিমান। প্রশাসনিক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে তার ৩০টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিষয়ে তার ‘জেলায় জেলায় সরকার’ একটি গ্রন্থ।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের মহকুমাগুলোকে জেলায় রূপান্তর এবং গণতান্ত্রিক জেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠার প্রথম প্রশাসনিক প্রতিবেদন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭২ সালে প্রণয়ন করেছিলেন তিনি।

২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় ‘স্মৃতিময় কর্মজীবন’ নামে তার ষাট বছরের বিচিত্র কর্মজীবনের স্মৃতিকথা। বইটি উৎসর্গ করেছিলেন তার সহধর্মিণী সৈয়দা সাবিয়া মুহিতকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে এবং জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের জন্যে ২০১৬ সালে আবুল মাল আবদুল মুহিতকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন বাংলাদেশ সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১১:১৬:০৮   ১৪৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত
পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
রোজায় বাজার সহনশীল রাখার চেষ্টা করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
দেশের যুবকদের কর্মসংস্থানে কাজ করতে চায় বিশ্বব্যাংক
সীমান্তে দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ
সাফজয়ী ঋতুপর্ণা-মণিকা ও রুপনা চাকমাকে রাঙ্গামাটিতে সংবর্ধনা
রাজু ভাস্কর্যে ঢামেক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি প্রেরণা জোগায়: আসিফ মাহমুদ
বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত লাগবে: জোনায়েদ সাকি
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কেমন, জানালেন ফখরুল
৩ মাসে জ্বালানি খাতে ৩৭০ কোটি টাকা সাশ্রয়: জ্বালানি উপদেষ্টা

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ