প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য ভুটানকে প্রস্তাব দিয়েছেন।
শনিবার (৬ মে) লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার অবস্থানস্থল ক্লারিজ হোটেলের দ্বিপাক্ষিক সভাকক্ষে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক এবং রানী জেটসুন পেমার বৈঠককালে তিনি এ প্রস্তাব দেন। হোটেলে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা ভুটানের রাজা ও রানিকে স্বাগত জানান।
বৈঠকের পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছি। আপনারা ভুটানের অর্থনৈতিক অঞ্চলের মতো করে আমাদের দেশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ইতোমধ্যে ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আপনারা চাইলে আমরা কুড়িগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দিতে পারি।
ভুটানের রাজা পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখে তার দেশে একটি প্রশাসনিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে চাওয়ার কথা বলায় শেখ হাসিনা তাকে এই প্রস্তাব দেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সুখী দেশ ভুটান, তাদের দেশের পরিবেশ বিপন্ন করতে চায় না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে রেলপথসহ সব ধরনের যোগাযোগের উন্নয়ন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ একটি সংযোগের কেন্দ্র। ভুটান বাংলাদেশের দুটি বন্দর এবং সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে। কারণ, আমরা সেগুলো এই উদ্দেশ্যে উন্মুক্ত করে দিয়েছি।
ভুটানের রাজা ও রানি শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক ভারত হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি ট্রানজিট পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভুটানের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রয়োজনে আমরা বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলব।
ভুটানের রাজা বলেন, তার দেশের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুজনেই বাংলাদেশে পড়ালেখা করায় বাংলাদেশের প্রতি তাদের বিশেষ অনুরাগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয়েই একান্তে বাংলাদেশ সফর করতে চান। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৫০ মিনিটের বৈঠকে তারা বিভিন্ন পারিবারিক বিষয়েও আলোচনা করেন এবং ভুটানের রাজা ও রানি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাদের খালা মনে করে আন্তরিকতা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম প্রমুখ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০:২১:৫৩ ১১৫ বার পঠিত