দুই সপ্তাহের বেশি বন্ধ থাকার পর শিগগিরই আবার সচল হচ্ছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। এরই মধ্যে করা হয়েছে কয়লা আমদানি।
বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে যে কটি মেগা প্রকল্প দেশে চলমান আছে, তার মধ্যে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র অন্যতম। ভারত-বাংলাদেশের যৌথ বিনিয়োগে চালু হওয়া কয়লাচালিত এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি উৎপাদনে আসে গত বছরের শেষভাগে। এর সুফলও মিলছিলো পরিকল্পনামাফিক।
তবে আমদানি করা কয়লার সংকটে বার বার হোঁচট খাচ্ছে কাঙ্ক্ষি ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে। ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে কেন্দ্রটিতে প্রতিদিন প্রয়োজন ৫ হাজার টন কয়লা। মজুত ফুরিয়ে এলেও নতুন কয়লা কেনার প্রক্রিয়া গতি হারিয়েছে ডলার সংকটে। সবশেষ চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে এ কেন্দ্রটি।
তবে আশার খবর হলো, চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে রামপালের কয়লা। প্ল্যান্টে পৌঁছালেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে জানালেন বিআইএফপিসির উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে কয়লার জাহাজটি বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে শুরু হবে আনলোডিং প্রক্রিয়া। এরপর যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
একই অবস্থা পটুয়াখালীতে চালু থাকা দেশের সবচেয়ে বড় তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রেও। ডলার সংকটে ঋণপত্র খুলতে দেরি হওয়ায় পায়রাতেও চলছে কয়লার টানাপোড়েন। দ্রুত যোগান স্বাভাবিক না হলে, অচিরেই রামপালের পথে হাঁটতে হবে এ কেন্দ্রটিকেও। এসবের প্রভাবে দেশে বেড়ে গেছে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি।
এদিকে, দেশে বর্তমানে ১৬ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে কম-বেশি ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে রাখতে কয়লা সংকটের মধ্যে কীভাবে প্রকল্পগুলো চালু থাকবে জানতে চাওয়া হলে সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন জানান, চলতি মাসের মাঝামাঝি ১ হাজার মেগাওয়াটে নামিয়ে নিয়ে আসা হবে লোডশেডিং। এছাড়া অদূর ভবিষ্যতে ব্যবহৃত হবে দেশীয় কয়লা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিকল্পিত মজুদ ব্যবস্থাপনা না থাকার মাশুল দিচ্ছে এসব বড় প্রকল্প। বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হলে ক্ষতির শঙ্কা আছে সামগ্রিক অর্থনীতির। এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেন, যত কষ্টই হোক জ্বালানি কিনে বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল রাখতে হবে। পাশাপাশি নিজস্ব জ্বালানি ব্যবহারেরও পরিকল্পনা করতে হবে।
তিনি আরও জানান, যখন যে জ্বালানি সস্তায় পাওয়া যাবে, সেটিই আমদানি করতে হবে। সেটার জন্য অবশ্যই পরিকল্পনা করে কাজ করতে হবে। দেশের অর্থনীতি ঠিক রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, জুনেই চালু হওয়ার কথা রামপালের দ্বিতীয় ইউনিট। সেক্ষেত্রে দুটি ইউনিট চালাতে প্রতিদিন ১০ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হবে। তাই ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬ লাখ টন কয়লার ক্রয়াদেশ দেয়া হয়েছে। পাইপ লাইনে আছে আরও ৬০ লাখ টন কয়লা।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৪৩:১২ ১১৮ বার পঠিত