বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেছেন, ঢাকাই মসলিনকে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে।
তিনি বলেন, বাণিজ্যিক উৎপাদনের মাধ্যমে মসলিনের স্বকীয়তা ঠিক রেখে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে এসে ব্যবহার উপযোগী করতে গবেষকদের সচেষ্ট থাকতে হবে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশের সোনালী ঐতিহ্য মসলিন সুতা ও কাপড় পুনরুদ্ধার এবং এ খাতে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন ।
মন্ত্রী বলেন, ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিন শাড়ি তৈরির প্রক্রিয়া বেশ জটিল ও শ্রমসাধ্য কাজ। একটি মসলিন শাড়ী তৈরি করতে প্রথমে সুতা তৈরি করতে হয় এবং পরে বুনন কাজ চলে। একটি মাঝারি মানের মসলিন শাড়ি তৈরি করতে অনেক সময় লেগে যায়। ফলে শাড়ির দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়।
একসময় সারা বিশ্বে এদেশের তৈরি ঢাকাই মসলিনের কদর ছিল- উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন কারণে প্রায় ১৭০ বছর পূর্বে এই গৌরবময় মসলিন হারিয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী’র নির্দেশে ঢাকাই মসলিন পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ২০১৮ সালে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ তাঁতবোর্ড বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সোনালী ঐতিহ্য ও বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ড ঢাকাই মসলিন পুনরুদ্ধার করে হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ব্যাপক অনুসন্ধান ও গবেষণার মাধ্যমে মসলিনের কাঁচামাল ফুটি কার্পাস খুঁজে বের করা, ফুটি কার্পাসের চাষাবাদ, সুতা উৎপাদন, কারিগরদের দক্ষতা উন্নয়ন করে উন্নতমানের মসলিন উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে মসলিন সূতা তৈরির তুলার জাত উদঘাটন এবং তুলা দিয়ে সুতা তৈরিসহ মসলিন শাড়ী তৈরির প্রযুক্তি উন্মোচন করেছে।
তিনি বলেন, দেশের সাধারণ তাঁতীদের মাঝে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে রূপগঞ্জের তারাবো পৌরসভায় ‘ঢাকাই মসলিন হাউজ’ স্থাপন করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, মসলিনের ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ ও পেটেন্ট অর্জিত হওয়ায় দেশের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পের টেকসই উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পটি ‘জনপ্রশাসন পদক-২০২১’ লাভ করেছে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ-এর সভাপত্বিত্বে অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, বিজিএমইএ-এর প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান, ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ এবং মসলিন সুতা ও কাপড় পুনরুদ্ধারের গবেষণার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩০:০০ ১৩৮ বার পঠিত