ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাইজেশন সাংবাদিকতায় ‘প্যাড-কলমের’ যুগের অবসান ঘটিয়েছে।
ডিজিটাল যন্ত্রের ব্যবহার ও ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন সাংবাদিকতার জন্য এখন অপরিহার্য এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রচলিত মিডিয়া থেকে বহুগুণ বেশি তথ্য উপাত্ত ডিজিটাল মিডিয়াকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করছে। তথ্য-উপাত্ত পাঠক ও দর্শকের কাছে অডিও, ভিডিও কিংবা প্রিন্ট ভার্সনে গ্রহণযোগ্য করে উপস্থাপনের বিষয়টিও স্মার্ট যুগের সাংবাদিকতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জার্নালিজম স্টুডেন্টস কাউন্সিল আয়োজিত ‘থার্ড জার্নালিজম স্টুডেন্টস ফেস্ট-২০২৩’ অনুষ্ঠানে ডিজিটাল প্লাটফর্মে উপস্থিত থেকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ জার্নালিজম স্টুডেন্টস কাউন্সিলের সভাপতি মো: হেদায়েতুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাকিব আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: মফিজুর রহমান বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট মানুষের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, ‘স্মার্ট মানুষ মানে পোষাকে বা আচার আচরণে নয়,স্মার্ট মানুষ হচ্ছে ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহারের দক্ষতা সম্পন্ন মানুষ।’
দেশের প্রথম ডিজিটাল সংবাদ সংস্থা আবাস এর চেয়ারম্যান, সাংবাদিক মোস্তাফা জব্বার বলেন, ১৯৭২ সালে সাংবাদিকতা যখন শুরু করি তখন লাইব্রেরিতে কাজ করতে হয়েছে। এখন লাইব্রেরিতে যাওয়ার দরকার হয় না, সার্চ ইঞ্জিন ব্রাউজিং করে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, ‘১৯৮৭ সালের ১৬ মে শীশার হরফের পরিবর্তে কম্পিউটারে বাংলা লেখার অভিযাত্রা শুরু করি। তখন কাগজের পত্রিকার বাইরে ছিল বেতার এবং বিটিভি। আজকের বাংলাদেশ সে অবস্থায় নেই। যে ডিজিটাল যন্ত্রে যুক্ত সে নিজেই সাংবাদিক।’
২০১৯ সালে বার্সেলোনায় ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমরা প্রযুক্তি যুগে বাস করছি, প্রযুক্তি আরও প্রসারিত হবে। সময়ের সাথে আমাদের প্রস্তুতি নিতেই হবে।’
তিনি বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা মনে করে মানুষের স্বল্পতা তারা প্রযুক্তি দিয়ে পূরণ করবে কিন্তু ‘আমাদের জন্য, মানুষের বিকল্প প্রযুক্তি নয়। বরং আমরা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করবো এবং ব্যবহার করবো। অর্থাৎ প্রযুক্তি ও মানুষের মিশেলে আমাদের এগুতে হবে’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত ১৪ বছরে যে অগ্রগতি হয়েছে তা ধরে রাখতে হবে। ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়কে চলার দক্ষতা নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আশাবাদ ব্যক্ত করে কম্পিউটারে বাংলাভাষার প্রবর্তক মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল তৃণমূল জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। এ বছর ঈদ যাত্রায় রেলের সব টিকিট অনলাইনে ক্রয়, জমির পর্চা এবং করোনাকালে ডিজিটাল সংযোগের মাধ্যমে মানুষের অচল জীবন যাত্রা সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা সাংবাদিকতার আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:০৭:৫৫ ১৩১ বার পঠিত