পুরো বিশ্বজুড়ে এক আলোচিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গত ১৪ মে তুরস্কে। সে নির্বাচনে পশ্চিমা মিডিয়া ধরেই নিয়েছিল বর্তমান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান হেরে যাবেন। কিন্তু শত বাধা অতিক্রম তিনি প্রায় ২৫ লাখ ভোটে এগিয়ে ছিলেন। যদিও ৫০% বেশি ভোট পাননি। মাত্র ৫% ভোটের কারণে তাকে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনে অংশ নিতে হচ্ছে। এর আগেও তিনি এরকম পস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। এবং জয় লাভ করেন পরে।
এদিকে দ্বিতীয় দফা ভোট অনুষ্ঠিত হবে ২৮ মে। সে ভোটের আগে অধিকাংশ জরিপে এগিয়ে রয়েছেন রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান। প্রায় সব সরকারি-বিরোধী জরিপ বলছে এরদোগান জয় লাভ করবেন। আর কোনো কোন জরিপ বলছে এরদোগান ৫০% এর বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হবেন।
এদিকে তুরস্কের নির্বাচনের কিংমেকার হয়ে ওঠা সিনান ওগানের সমর্থন পেয়েছেন রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান। ফলে তার আরেক দফা প্রেসিডেন্ট হওয়া এখন কেবল মাত্র সময়ের ব্যাপার। সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এরদোগানকে সমর্থন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ওগান। প্রথম দফার ভোটে এমনিতেই প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগ্লু থেকে পাঁচ শতাংশ ভোটে এগিয়ে ছিলেন এরদোগান। এরপর ওগানের সমর্থনও পাওয়ায় এখন আগামী ২৮শে মে’র নির্বাচন কেবল আনুষ্ঠানিকতা।
এর আগে গত ১৪ই মে তুরস্কের নির্বাচনে এরদোগান পেয়েছিলেন ৪৯.৫২ শতাংশ ভোট। অপরদিকে কামাল পান ৪৪.৮৮ শতাংশ ভোট। তৃতীয় স্থানে থাকা সিনান ওগান ৫.১৭ শতাংশ ভোট পেয়ে চমক সৃষ্টি করেছিলেন। দ্বিতীয় দফার ভোটে তাই কামাল যদি সিনানের সমর্থন পেতেন তাহলে তার জয়ের একটি সুযোগ সৃষ্টি হতো। তবে সিনান সোমবার এরদোগানকে সমর্থন দেয়ায় সেই আশা নিভে গেলো। সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সিনান বলেন, এরদোগানকেই সমর্থন করবেন তিনি। এরদোগানের দল পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।
ওগানের বক্তব্য, তার দল মনে করে, পার্লামেন্টে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, প্রেসিডেন্টও সেই দল থেকেই হওয়া উচিত। সে কারণেই তিনি এরদোগানকে সমর্থন করবেন বলে স্থির করেছেন। তার বক্তব্য, রাজনৈতিক মতানৈক্য থাকতে পারে। কিন্তু সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আর সে কারণেই আমি এরদোগানকে সমর্থন করছি।
এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, আগামী ২৮শে মে রানঅফ ভোটে এ দেশের মানুষ পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে। সোমবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরটিআর হাবেরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এরদোগান পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে এ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। এসময় তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, নির্বাচনে আমাকে পরাজিত করতে আদাজল খেয়ে নেমেছে পশ্চিমা মিডিয়া। তারা নির্লজ্জভাবে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। আমার বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যাচার করেছে। কিন্তু তুরস্কের মানুষ গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আমাকেই জয়ী করেছে। আশাকরি ২৮ মে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় দফা অর্থাৎ রানঅফ ভোটেও পশ্চিমাদের গালে চপেটাঘাত করে আমাকেই জয়ী করবে।
এরদোগান বলেন, আমরা আমাদের গণতান্ত্রীক মূল্যবোধ অর্জন করেছি। তুরস্কের অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র ও সামরিক শক্তির উত্থানে ভীত হয়ে পশ্চিমারা আমাদের পিছনে লেগেছে। তাছাড়া, তুরস্কের কারণেই কাতার, আজাবাইজান ও লিবিয়ায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেনি। আমরা এখন শত্রু আর মিত্র খুব পরিষ্কারভাবে চিনতে পারছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪৯:২৩ ১০৮ বার পঠিত