জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, এখন শহর থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত সবখানেই ভেজাল ও নকল দ্রব্যের ছড়াছড়ি। কসমেটিকস থেকে শুরু করে খাদ্যদ্রব্য, প্যাকেটজাত দ্রব্য, ওষুধ সবকিছুতেই ভেজাল পাওয়া যাচ্ছে। এসব ভেজাল বা নকল ঠেকাতে ভোক্তাদের সচেতন হতে হবে। ভয়েস রেইজ করতে হবে। অভিযোগ করতে হবে। ভেজাল কারবারীদের ধরিয়ে দিতে হবে। সকলে মিলে কাজ করলে ভেজাল প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
বুধবার (৩১ মে) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় আয়োজিত ‘ভোক্তা-অধিকার আইন ২০০৯’ বিষয়ক সেমিনারে মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে একটি অভিযানে পাওয়া যায় দুই বছর আগের মেয়াদোত্তীর্ণ ১০০ টন গুঁড়া দুধ। যেগুলো সিমেন্টের মতো শক্ত হয়ে গেছে। সেগুলো গুঁড়ো করে আবারও বাজারজাত করা হচ্ছিলো। এগুলো খেলে যেকোনো সুস্থ শিশু অসুস্থ্ হয়ে মারা যেতে পারতো। এটি শিশু হত্যার মতো অপরাধ।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কসমেটিকসের ব্যবহার বেড়েছে। এটির সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা নকল ও ভেজাল পণ্য বাজারে সরবরাহ করছে। এ কসমেটিকস ব্যবহারে মেয়েদের স্কিন পুড়ে যাচ্ছে। গ্রামে নকল মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পৌঁছে যাচ্ছে মুহূর্তেই। ডায়াগনিস্ট সেন্টারগুলোও ঠিক নেই। এভাবেই চলছে। খাবারে রং মেশানো হচ্ছে। রেস্টুরেন্টে বাসি, পচা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। কাপড়ের দাম ইচ্ছেমতো বসিয়ে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এসব প্রতিরোধ করতে হলে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে ও ভয়েস রেইজ করতে হবে।
আর ভোক্তারা কোনোভাবে প্রতারিত হতে দেখলে বা প্রতারিত হলে কি করবে? এ বিষয়টিও আজকে আমাদের আলোচনার অংশ। কেউ প্রতারিত হলে ঘরে বসেই অভিযোগ করতে পারবে আমাদের কাছে যে কেউ। হটলাইন নম্বরে কল করে অথবা এসএমএস এর মাধ্যমে অথবা ইমেইল এর মাধ্যমে অথবা ফ্যাক্স বা চিঠি দিয়ে অভিযোগ করতে পারবে। এছাড়াও ভোক্তা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে অনলাইনে অভিযোগ করা যাবে। আর অভিযোগ করার সময় চারটি বিষয় উল্লেখ করতে হবে। সেগুলো হলো (১) অভিযোগকারীর তথ্য। (২) যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার তথ্য। (৩) অভিযোগের বিবরণ ও (৪) প্রমাণ (অডিও, ভিডিও, রশীদ)।
প্রতিকার চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অধিকার আপনার, অধিকার এর জন্য আপনাকে প্রতিকার চাইতে হবে। প্রতিকার করার চেষ্টা আমরা করবো। সকলকে প্রতিকার চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেরোবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ বলেন, ভোক্তা অধিকার আইন বাস্তবায়ন কঠিন বিষয়। এজন্য ভোক্তা, ব্যবসায়ীসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সকলকে সচেতন হতে হবে। তখনই সমাজ থেকে অন্যায় নির্মূল করা সম্ভব হবে।
এসময় বেরোবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মজিব উদ্দিন আহমদ, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.তুহিন ওয়াদুদ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন বেরোবি মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১২:৩৭ ১২৮ বার পঠিত