রাজধানীতে বসা কোরবানির পশুর বড় হাটগুলোর মধ্যে আফতাবনগর অন্যতম একটি। এখানে এবারও বিশাল এলাকাজুড়ে হাট বসেছে। কয়েকদিন আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা গরু আনতে শুরু করেছেন। আজও হাটে ট্রাকে ট্রাকে ঢুকছে গরু। তবে হাটে ক্রেতাদের সমাগম এখনও শুরু হয়নি। বিক্রেতারা বলছেন, হাট পুরোপুরি জমজমাট হতে আরও দুই একদিন সময় লাগবে।
হাটের শুরুর দিকে গরুর দাম কেমন চাচ্ছেন বিক্রেতারা, আর ক্রেতারাই বা কেমন বলছেন- এসব সব তথ্য জানতে রোববার (২৫ জুন) রাজধানীর আফতাবনগর হাট ঘুরে দেখা গেছে, মাঝারি আকৃতির গরুর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি এই হাটে। বড় ধরনের গরুও প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। তবে মাঝারি গরুর ক্রেতারাই হাটে ঘুরে দর দাম বেশি জানছেন।
পাবনা থেকে আফতাবনগর হাটে ৩টি গরু এনেছেন রাশেদুল ইসলাম। শুরুর দিকে কেমন চলছে গরুর দাম- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মাঝারি সাইজের গরু এনেছি। এর মধ্যে যেটা সবচেয়ে বড় এটার দাম চাচ্ছি ১ লাখ ৬০ হাজার। বাকি ২টার দাম চাই ১ লাখ ২০ আর ১ লাখ ১৫ হাজার। এটা আমার চাওয়া দাম, ক্রেতাদের সঙ্গে দর দামে এটার দাম কিছুটা কমানো যাবে। পুরো হাটে প্রতি মন গরু ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় হিসাবে দাম চাচ্ছে সবাই। আমিও সেই হিসাবে আনুমানিক ৫ মনের কিছুটা কম ওজনের গরুর দাম চাচ্ছি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
অন্যদিকে, বগুড়া থেকে ২২টা গরু এনেছেন রেজাউল করিম। তবে কেবল হাট শুরু হওয়ায় এখনও একটি গরুরও বিক্রি করতে পারেননি তিনি।
কেমন চলছে গরুর হাট এ বিষয়ে ধারণা দিয়ে তিনি বলেন, মাঝারির একটু বড় সাইজের গরু যার ওজন আনুমানিক ৮ মন, এই গরুটার দাম চাচ্ছি ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এমন ভাবে অন্যান্য গরু কোনোটা দেড় লাখ, কোনোটা ২ লাখ, আড়াই লাখ এমন দাম চাচ্ছি। তবে ৮ মনের যে গরু এটা ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা দাম, সে হিসাবে প্রতি মন গরুর দাম পড়ছে ৩২/৩৩ হাজার টাকা।
তিনি আরও বলেন, আর যেসব গরু দেখতে সুন্দর, কোনো খুঁত নেই, রং ভালো সেসব গরু আরেকটু বেশি দামে বিক্রি হয়। তবে এখনও হাট জমে উঠতে শুরু করেনি।ক্রেতাদের তেমন উপস্থিতিও নেই। হাট জমতে আরও দুই এক দিন সময় লাগবে। আশা করছি এই হাটেই সবগুলো গরু বিক্রি করে বাড়ি ফিরে যাবো।
এদিকে হাটে ক্রেতা সাধারণের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অল্প সংখ্যক যেসব ক্রেতারা হাটে আসছেন তারা কেবল ঘুরে ঘুরে গরু দেখছেন। এর মধ্যে দুই একজন গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। সেকারণে হাসিল প্রদান করা বুথগুলোতেও কোনো ভিড় দেখা যায়নি।
রাজধানীর মালিবাগ থেকে আফতাব নগর হাটে এসেছেন হাসিবুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা। তিনি বলেন, প্রতিবার কোরবানির সময় আফতাব নগর হাট থেকেই গরু কিনি। এবারও কিনব। তাই হাটে আগেই গরুর দর দাম সম্পর্কে ধারণা নিতে এসেছি। আর গরু কিনব ঈদের দুই একদিন আগে।
এদিকে আফতাব নগর হাটে ইজারাদারের পক্ষে হাসিল বুথ বসানো হয়েছে অনেকগুলো। এরমধ্যে একটি হাসিল বুথের দায়িত্বে থাকা মাসুদুর রহমান বলেন, হাট এখনও জমেনি, তাই হাসিল ঘরেও অলস সময় কাটাচ্ছি আমরা। আশা করা যাচ্ছে কাল পরশুর মধ্যে আমাদের এই হাট ক্রেতা-বিক্রেতাতে জমজমাট হয়ে উঠবে। এখন মূলত গরু দেখতে, দাম জানতে বেশি আসছে ক্রেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৫৯:১৬ ১৩২ বার পঠিত