ঈদুল আজহার প্রথম তিন দিন পশু কোরবানি করার নিয়ম থাকলেও সুষ্ঠুভাবে বর্জ্য অপসারণের জন্য প্রথম দুই দিনে কোরবানি করার অনুরোধ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, দুই দিনের মধ্যে যেন পশু জবাইয়ের কাজ শেষ করা হয় এবং কোনোভাবেই যেন তৃতীয় দিন পর্যন্ত এটা না নেওয়া হয় সে বিষয়ে সবার কাছে অনুরোধ করছি।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকালে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন মেয়র তাপস।
শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ঈদগাহকে সুষ্ঠুভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে বলেই ভোর থেকে মুষলধারে বৃষ্টির পরও জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে ঈদের জামাত আদায় করতে পেরেছেন।
এছাড়াও প্রথম দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হবে বলেও তিনি এসময় জানান।
মেয়র বলেন, এই জাতীয় ঈদগাহ সুষ্ঠুভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। সেজন্য ভোর থেকে তুমুল বৃষ্টি, মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার পরও কোনোরকম অসুবিধা হয়নি। সব মুসল্লি অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরেছেন। সেভাবেই আমরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি এবং আল্লাহর রহমতে আজ ঈদের জামাত সম্পন্ন হয়েছে।
ভবিষ্যতেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে ঈদের জামাতের প্রস্তুতি রাখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রতিকূল আবহাওয়ায় আমরা সুষ্ঠু পরিবেশ রাখতে সক্ষম হয়েছি। বৃষ্টির কারণে অনেকে সমবেত হতে পারেননি। তারপরও যারা এসেছেন তাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা, অভিনন্দন। ভবিষ্যতেও আমরা এভাবেই প্রস্তুতি রাখব, যাতে মুষলধারে বৃষ্টি হলেও এই ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে কোনো অসুবিধা না হয়।
গতবারের চেয়ে এবার বর্জ্য অপসারণে আরও বেশি সুফল দেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে মেয়র তাপস বলেন, কোরবানির ঈদ তথা ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ নিয়ে আমাদের দুই সিটির ব্যাপক কর্মযজ্ঞ থাকে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আমাদের সাড়ে তিনশর ওপর যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত আছে। বিভিন্ন বহির্বিভাগ থেকেও গাড়ি এবং যান-যন্ত্রপাতি এনেছি। প্রায় ১০ হাজার জনবল নিয়োজিত থাকবে। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আরম্ভ হয়েছে। আমরা আশাবাদী গতবারের মতো এবারও ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সব বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হব। গতবারও যেভাবে সফল হয়েছি, ইনশাআল্লাহ এবারও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এই বর্জ্য অপসারণ করতে পারব, ঢাকাবাসীকে আরও বেশি সুফল দিতে পারব।
এসময় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির মধ্যেও আসতে পেরেছি। আগে যেমন বৃষ্টির মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় আটকে যেতাম। আজ উত্তরা থেকে আসার সময় দেখেছি, যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে রাস্তায় সে পরিমাণ জলজট হলেও পানি নেমে গেছে।
যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, তাড়াতাড়ি বর্জ্য অপসারণ করতে এলাকাবাসীর সাহায্য দরকার। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যত্রতত্র যেন ময়লা না ফেলেন। আমরা প্রত্যেককে পলি দিয়েছি। বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেবেন। আমাদের প্রায় ১১ হাজার শ্রমিক কাজ করছে। শ্রমিকদের সাহায্য করার অনুরোধ করছি।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, কোরবানি দিয়ে অনেকেই বাড়ি চলে যাবেন। বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করছি, যেসব পাত্রে পানি জমে তা উল্টে রেখে বাড়িতে যাবেন। এটা সবার জন্য সহায়ক হবে। অবশ্যই ছাদে যে পাত্র আছে যেখানে বৃষ্টির পানি জমতে পারে তা উল্টে যাবেন। আমাদের সব কর্মকর্তা মাঠে থাকবে। নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। আপনারা সহযোগিতা চাইলে আমরা দ্রুত বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নেব।
প্রধান ঈদ জামাতে প্রধান বিচারপতি, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, ডিএসসিসি মেয়রের দুই সন্তান শেখ ফজলে নাওয়াল ও শেখ ফজলে নাশওয়ান অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৫:০৯ ১২৫ বার পঠিত