প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিবের (এপিএস) নাম ভাঙিয়ে প্রতারণার অভিযোগে বাবা-ছেলেকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরি, বদলি এবং পদোন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। পুলিশ বলছে, শতাধিক লোক তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মুহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মজিবুর রহমান খন্দকার এবং জাহিদুর রহমান খন্দকার সম্পর্কে বাবা-ছেলে। তারা দু’জন মিলে প্রতারণার সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন।’
তিনি বলেন, ‘ভিভিআইপিদের নাম ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস টু হাফিজুর রহমান লিকুর ছদ্মনাম ধারণ করে নিজে বাবার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আবার বাবাও এটা বিশ্বাস করে প্ররোচিত হয়ে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে বায়োডাটা এনে টাকা-পয়সা নিয়েছেন; বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলেও অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এভাবে প্রতারণা করে শত শত মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা।’
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ছেলে মাদকাসক্ত, মাদকের টাকা জোগাড় করতে নানা রকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি জানতেন বাবা। আর বাবা যে ধোয়া তুলসী পাতা না, সেটিও জানতেন ছেলে। বাবা মজিবুর রহমান নিজেকে পরিচয় দিতেন মেজর হিসেবে, কখনো আবার বলতেন তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন। সবই যে ভুয়া ছেলে ভালো করেই জানতেন।’
জাহিদুর রহমান তার বাবাকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস টু হাফিজুর রহমান লিকুর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সরকারি চাকরি, বদলি, পদোন্নতি সবই করা সম্ভব। কয়েক দফা ফোন করে এপিএস পরিচয়ে ছেলেই কথা বলেন বাবার সঙ্গে। ছেলেই যে এপিএস হাফিজুর রহমান লিকুর ছদ্মবেশ ধারণ করেছে তা বুঝতে পারেন মজিবুর রহমান। চাকরি প্রত্যাশি খুঁজতে থাকেন বাবা। শুরু হয় বাবা-ছেলের প্রতারণা।
ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ এই বাবা-ছেলেকে শনিবার (৮ জুলাই) গ্রেফতারের পর জানতে পারে, দীর্ঘদিন ধরেই তারা অভিনব প্রতারণা করে আসছেন। প্রতারণায় কেউ কারও চেয়ে কম নন।
এছাড়া টাকা দিয়ে সরকারি চাকরি পেতে যারা এ ধরনের কথিত এপিএসদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তারাও সমান অপরাধী বলছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০৭:৪৭ ১১০ বার পঠিত