পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ছিলেন অমায়িক ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তাঁর মধ্যে কোনোরকম অহংকার ছিল না। তিনি যে বঙ্গবন্ধুর ছেলে এটা কখনও বলে বেড়াতেন না। রাষ্ট্র প্রধানের সন্তান হয়েও তাঁর মধ্যে এর বহিঃপ্রকাশ দেখা যেতো না। অগ্রজদের প্রতিও তাঁর শ্রদ্ধাবোধ ছিল অকৃত্রিম।
তিনি আজ শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে একথা বলেন।
শেখ কামালের কর্মময় জীবন স্মরণ করে ড. মোমেন বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। মাত্র ২৬ বছরের ক্ষুদ্র জীবনে এ দেশকে তিনি অনেককিছু দিয়ে গেছেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার নিজ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে, বিশেষ করে সলিমুল্ল¬াহ হলের শিক্ষার্থী হিসেবে, শেখ কামালের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘খেলাধুলার প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ ছিল। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে তাঁর দুর্দান্ত বিচরণ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে তিনি সরাসরি সম্পৃক্ত থাকতেন। তাঁর সুন্দর আচার-ব্যবহারের কারণে সবার কাছে তিনি অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। আর অন্যকে সহায়তা করতে তিনি সবসময় এগিয়ে আসতেন।’
’৭৫ এর ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকদের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ কামালের মতো অমায়িক ও সম্ভাবনাময় ব্যক্তিত্বকে স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকেরা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। ১৯৭৫’র ১৫ আগস্টের মতো নিষ্ঠুরতম হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায় না। এই হত্যাকান্ডে শুধু রাষ্ট্রপ্রধানকে নয়- তাঁর (বঙ্গবন্ধু) পরিবারের অন্যান্য সদস্যকে আত্মীয়-স্বজনদের তিন-তিনটি বাড়ি থেকে খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি ১০ বছরের শিশুপুত্র রাসেলকেও হত্যা করেছে খুনীরা। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নৃশংসতম হত্যাকান্ড খুঁজে পাওয়া যায় না।’
ড. মোমেন বলেন, ‘দুঃখের বিষয় ১৫ আগস্টের আত্মস্বীকৃত খুনিদের মধ্যে ৫ জন এখনো বিদেশে পালিয়ে আছে। আদালতের রায় কার্যকর করতে পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’
শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের রুহের মাগফিরাত কামনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মসজিদে জোহর নামাজের পর আয়োজিত এ দোয়া মাহফিলে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
দোয়া মাহফিলে শেখ কামালসহ ১৯৭৫’র ১৫ আগস্টে শাহাদত বরণকারী বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
এর আগে, শনিবার সকালে, শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডি আবাহনী মাঠে শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে এবং বনানী কবরস্থানে শেখ কামাল ও তাঁর পরিবারের শাহাদত বরণকারী সদস্যদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। এসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:০৬:৫৭ ১২৯ বার পঠিত