মেডিকেল ডিভাইস ক্রয়-বিক্রয়ে দামের বিস্তর ফারাক: ভোক্তা ডিজি

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » মেডিকেল ডিভাইস ক্রয়-বিক্রয়ে দামের বিস্তর ফারাক: ভোক্তা ডিজি
রবিবার, ৬ আগস্ট ২০২৩



মেডিকেল ডিভাইস ক্রয়-বিক্রয়ে দামের বিস্তর ফারাক: ভোক্তা ডিজি

বাংলাদেশে হার্টের পেসমেকার ও ভাল্বসহ মেডিকেল ডিভাইস যে দামে আমদানি করা হয় তা রোগীদের কাছে বিক্রির ক্ষেত্রে দামের বিস্তর ফারাক থাকে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেছেন, এটি চাল-ডালের কোনো ব্যবসা নয়, এটি জীবন রক্ষাকারী পণ্যের ব্যবসা। এক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন।

রোববার (৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে মেডিকেল ডিভাইস ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

ভোক্তা ডিজি বলেন, মেডিকেল ডিভাইসের মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি ও দামের যে তথ্য আমরা পেয়েছি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডাটা অ্যানালাইসিস করে যে তথ্য পেয়েছি, এ দুইয়ের দামের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আলাদা একটি স্টাডি করেছি, সেখানেও এসব পণ্যের দামে বিস্তর ফারাক পেয়েছি।

এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, প্রতিবেশী দেশেও এ চিকিৎসায় খরচ অনেক কম। কিন্তু আমাদের দেশে কেন এত বেশি হবে? এ বিষয়টি ভালো করে দেখার সুযোগ রয়েছে। আমরাও পেসমেকার-ভাল্ব যে দেশগুলো থেকে আমদানি করি, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও সেসব দেশ থেকেই আমদানি করে। তাহলে দুই দেশের মধ্যে এত দামের ফারাক হবে কেন সেটি জানা খুবই জরুরি।

তিনি বলেন, হৃদরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত মেডিকেল ইকুইপমেন্টের দাম ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ঠিক করে দেওয়া রয়েছে। আমরা যখন বাংলাদেশ ব্যাংকের থেকে আমদানির তথ্য নিলাম তখন দেখতে পেলাম ৩০ ডলার থেকে ৭ হাজার ডলারের ইকুইপমেন্ট রয়েছে। এক্ষেত্রে ৩০ ডলারে ইমপোর্ট করে ৩ লাখ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে কিনা সেটি দেখতে হবে। এটি চাল ডালের ব্যবসা নয়, এটি জীবন রক্ষাকারী একটি পণ্যের ব্যবসা। এক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, মেডিকেল ইকুইপমেন্টের বিষয়টি সরকারের একটি নির্দিষ্ট বিভাগ দেখছে। সাম্প্রতিক সময়ে এখানে কিছু অভিযোগ উঠাছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। একটি প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত মূল্যের থেকে ৭০ হাজার টাকা বেশি দামে বিক্রির প্রমাণ পেয়েছি। ফলে প্রতিষ্ঠানটিকে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরপর আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বসেছি। কোনো পণ্যের আমদামি মূল্য কত, আর বিক্রয়মূল্য কী রাখা হচ্ছে, তা জানার প্রয়োজন।

এসময় আগামীকাল (৭ আগস্ট) দাম পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে এবং আগামী একমাসের মধ্যে কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী অবস্থা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন এ এইচ এম সফিকুজ্জান। জীবন রক্ষাকারী এসব পণ্যে যেন মনোপলি তৈরি না হয় সেটিই তাদের প্রত্যাশা বলেও জানান তিনি।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ক্লিনিক শাখার সহকারী পরিচালক ডা. মো. মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখা থেকে যেটি করে থাকি, জেলা হাসপাতাল থেকে বিশেষায়িত হাসপাতাল পর্যন্ত যন্ত্রপাতিগুলো ফলোআপ করি। সরকারি হাসপাতালগুলোতে মেডিকেল ডিভাইস বিশেষ করে স্টেন্টের দামগুলোর বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করি। এক্ষেত্রে সমস্যাটা হলো প্রাইভেট হাসপাতালগুলো। সেগুলোর সঙ্গে আমদানিকারক কোম্পানিগুলোর একটি মিউচুয়াল আন্ডারসেন্ডিং থাকে। তারা নিজেরা ইচ্ছেমতো দাম দিয়ে সেগুলো কেনাকাটা করে এবং বিক্রিও সেই অনুযায়ী একটা দাম নির্ধারণের মাধ্যমে করে।

তিনি আরও বলেন, সরকারি হাসপাতালে সমস্ত যন্ত্রপাতি টেন্ডারের মাধ্যমে কেনাকাটা করতে হয়। তবে স্টেন্ট ও পেসমেকারের ক্ষেত্রে কোনো টেন্ডারে হয় না। এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের একটু ভাবা যেতে পারে। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে হাসপাতালগুলোতে যাই, ক্যাথল্যাবগুলো দেখি এবং নিয়মিত মনিটরিং করার চেষ্টা করি। বিশেষ করে হৃদরোগ হাসপাতালেও যেন এ ধরনের কেনাকাটাসহ সমস্ত কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে হয়, সেগুলো আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখব।

ডা. মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, আমরা চেষ্টা করব কোনোভাবেই যেন রোগীর স্বার্থ ব্যাহত না হয়। তাদের স্বার্থ সংরক্ষণই আমাদের মূল দায়িত্ব।

বাংলাদেশ মেডিকেল ডিভাইস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের দামের পার্থক্য আছে এটা ঠিক, তবে আমরা পুরোপুরি আমদানি নির্ভর হলেও তারা নয়। ভারতে পর্যাপ্ত স্টেন্ট তৈরি হয় বিধায় তারা কম মূল্যে রোগীদের দিতে পারে। তারা পাঁচ বছর আগেই স্টেন্টের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়, এর বেশি রোগীদের থেকে নেওয়া যাবে না। কিন্তু আমাদের দেশে এমন কোনো পদ্ধতি নেই।

যেহেতু আমাদের দেশে পুরোপুরি আমদানি নির্ভর, আমরা চাইলেই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে দিতে পারি না। তাছাড়া এই মেডিকেল ডিভাইসগুলো কেনার আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে আমাদের একটি অ্যাপ্রুভাল নিতে হয়। পাশাপাশি আমদানির পর ইনডেন্ট অনুযায়ী ইনভয়েসের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হয়। সবশেষে একটা দাম নির্ধারণ করা হয়। যে কারণে এখানে মাত্রাতিরিক্ত দাম রাখার কোনো সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৪:৩২   ১০৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
২৭ টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের দায়িত্ব পালনে নগর ভবনে ১৭ সদস্যের কমিটি
সংযুক্ত আরব আমিরাতে আরো বেশি জনশক্তি নেয়ার আহবান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
ডিজিটাল সেক্টরে কর্মক্ষেত্র তৈরি করতে চায় সরকার : উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
জেলা পুলিশের অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত
প্রাণী রক্ষায় মানুষ আর প্রাণীর বিভাজন নয় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আগামী মাস থেকে সুপারশপগুলোতে পাটের ব্যাগ চালু হবে : বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা
উভয় পক্ষকে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান গুতেরেসের
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের ক্লিন এয়ার প্রকল্পের জন্য ৩০ কোটি মার্কিন ডলার দেবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ