ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, খুনি জিয়াউর রহমান জীবিত থাকলে তাকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করার জন্য অবশ্যই সাজা দেওয়া হতো।
শনিবার (১২ অগাস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, মার্চ মাসে খুনি রশিদ, খুনি ফারুক তাকে (জিয়াউর রহমান) জানিয়েছেন যে, আমরা রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করতে চাচ্ছি। ডেপুটি চিফ অফ আর্মি স্টাফ থাকাকালীন সেনানিবাসে তার (জিয়াউর রহমান) বাসায় গিয়ে অধস্তন কর্মকর্তারা তাকে জানালো যে, তারা এরকম রাষ্ট্রদ্রোহ কার্যকলাপে লিপ্ত হতে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে যে, উনি তখন কী দায়িত্ব পালন করলেন, কী ব্যবস্থা নিলেন? মার্চ থেকে অগাস্ট পর্যন্ত তিনি ঊর্ধ্বতন কারো কাছে এ তথ্য প্রকাশ করেননি। বরং বলেছেন, ইউ গো এহেড। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন অধস্তন কর্মকর্তাকে বলেন, ইউ গো এহেড, এটার মানে হলো, ইট ইজ এন অর্ডার। এন অর্ডার টু জুনিয়র অফিসার, তোমরা রাষ্ট্রপতিকে গিয়ে হত্যা কর। ১৫ অগাস্ট ঘটনা ঘটানোর পরে যারা সেনা সদরে বাধা দেওয়ার চিন্তা করেছিল বা চেষ্টা করেছিল। খুনি রশিদ-ফারুকের নেতৃত্বে তাদের আটক করে নিয়ে গিয়েছিল। তারা নিয়ে গিয়েছিল খুনি জিয়াউর রহমানের কাছে। কেন? কারণ উনি তাদেরকে শেল্টার দেবেন।
মেয়র বলেন, সেজন্যই তার কাছে গিয়েছিল এবং যারা বাধা দিতে চেষ্টা করেছেন, খুনি জিয়াউর রহমান তাদের আটক করেছেন। আর যারা খুনি তিনি তাদের ছেড়ে দিয়েছেন, তাদের মুক্ত রেখেছেন। এ যে নেক্সাস (বন্ধন), এই যে রিলেশনশিপ, এতেই প্রমাণ হয় যে, সেখানে ষড়যন্ত্র ছিল, যোগসাজশ ছিল। যার ফলশ্রুতিতে উনি (জিয়াউর রহমান) ওনার ভূমিকা পালন করেছেন। ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল, তার পুরো উল্টো করে উনি খুনিদের পক্ষে দায়িত্ব পালন করেছেন। খুনি জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা পরিচালনায় সময় জীবিত থাকতেন, তাহলে অবশ্যই তাকে সাজা এবং দণ্ড দেওয়া হতো।
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সংবাদ জানানোর পর খুনি জিয়া বলেছিল, সো হোয়াট। ভাইস প্রেসিডেন্ট আছে, সংবিধান আছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, ভাইস প্রেসিডেন্টকেও ক্ষমতা দেওয়া হয়নি, সংবিধানও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
নতুন করে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, কথায় কথায় আজকে শুনি যে, সংবিধান কিছু না। ইচ্ছে করলে ফেলে দিতে পারি, ইচ্ছে করলে ছিঁড়ে ফেলতে পারি, ইচ্ছে করলে পরিবর্তন করতে পারি। যারা এটা বলছেন, এটাই স্বাভাবিক যে তারা এটা বলবেন। কারণ তাদের ইতিহাস তা-ই বলে। তারা সংবিধানকে ভূলুণ্ঠিত করে, কাটাছেড়া করে, সংবিধানকে রঙিন করে তারা ক্ষমতায় গিয়েছিল।
ডিইউজে এর সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৪:৪৯ ১৬৪ বার পঠিত