পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘শিক্ষা, কৃষিসহ যেখানে আমরা হাত দিই সেখানেই বঙ্গবন্ধুর অবদান রয়েছে। তিনি কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিয়ে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।’
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত সিএ ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জীবনের নায়ক ছিলেন তিনি। আমার সময়ের সকল অংশ ঢাকা তার ছায়ায়। তিনি কত মহান, কার চেয়ে মহান, এগুলো আমার বলার বিষয় নয়। এগুলো পণ্ডিত ব্যক্তিরা বলবেন।
আমার মতো, আমার প্রজন্মে, নিম্নমধ্যবিত্ত পর্যায়ের, গ্রামীণ পর্যায়ের, যারা সুধীসমাজের অংশ নয়, ওই গ্রাম থেকে উঠে আসা উচ্চাকাঙ্ক্ষী বাঙালি তাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ছিলেন মহান। তিনি আমাদের আশার বার্তা দিয়ে গেছেন।’
তিনি বলেন, ‘যেখানে আমরা হাত দিই, সেখানেই তার অবদান। শিক্ষাকে জাতীয়করণ, শিক্ষকদের মানবেতর জীবন থেকে মানুষের পর্যায়ে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
কী বিশাল ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড কৃষি। সেখানেও ঐতিহাসিক পদক্ষেপ, কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিয়েছিলেন। শিক্ষায়, কৃষিতে সর্বত্র তার অবদান। এমনকি যমুনা সেতুর ধারণা তার থেকে শুরু।
তিনি জাপানে গিয়ে জাপানিজদের অনুরোধ করলেন। তারা একটা টিম পাঠালে, তারা এসে দেখে ফিরে গিয়ে একটা প্রতিবেদনও দিল। তারপর তাকে হত্যা করা হলো।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘আরএমজি খাতে এই মুহূর্তে সমর্থন না কমিয়ে বরং বাড়ানো উচিত। একই সাথে অন্য খাতগুলোকেও একই সুবিধা দিতে হবে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের বিকাশ, এসএমই ও বিদেশি বিনিয়োগের ওপর জোর দিতে হবে। সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে জলবায়ু সহনীয় উন্নয়ন বা টেকসই নগরায়ণ ও সবুজ জ্বালানিতে। এগুলো করতে গেলে যে অর্থের দরকার হবে সেই জায়গাতে আমরা বেশ পিছিয়ে আছি, সেটা হলো কর জিডিপির হার, এটা আমাদের খুবই কম। কেন সবাই কর দিচ্ছে না? যাদের কর দেওয়ার কথা তারা দিচ্ছে না, আবার যারা শুধু কর দিচ্ছে শুধু তারাই দিচ্ছে, নতুনরা কেন আসছে না―এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমাদের কর জিডিপির হার অন্তত ১৫ শতাংশে নিয়ে আসতে হবে। যেটা ৮ শতাংশের আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে। এটা দ্বিগুণ করতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারলে নিশ্চয়ই সোনার বাংলা গড়ে তোলা কঠিন হবে না। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই। সেই সোনার মানুষদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, দিয়ে সোশ্যাল এন্টারপ্রেনারশিপ গড়ে তোলার দরকার আছে।’
তিনি আরো বলেন, উৎপাদন বৃদ্ধি করে দাম নিয়ন্ত্রণ, অর্থনীতিকে বহুমাত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাংবাদিক অজিত কুমার সরকার। এ ছাড়া বক্তব্য দেন আইসিএবির প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক সভাপতি মো. শাহাদাৎ হোসেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিষ বসু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৬:৫১ ১২০ বার পঠিত