শুক্রবার, ১৮ আগস্ট ২০২৩

৭৫’র মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করার স্বপ্ন দেখলে চোখ উপড়ে ফেলা হবে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » ৭৫’র মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করার স্বপ্ন দেখলে চোখ উপড়ে ফেলা হবে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
শুক্রবার, ১৮ আগস্ট ২০২৩



৭৫’র মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করার স্বপ্ন দেখলে চোখ উপড়ে ফেলা হবে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ’৭৫-এর মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করার যদি মিনিমাম কোন স্বপ্ন দেখা হয় তবে সে চোখ উপড়ে ফেলা হবে। আর সেই হাত ভেঙ্গে দেয়া হবে, সেই হাত কেটে ফেলা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ দিনাজপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্থানীয় প্রেসক্লাব আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সালের দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দুটি রাষ্ট্র পাকিস্তান ও ভারত সৃষ্টি হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু দ্বিজাতিতত্ত্বে বিশ্বাস করতেন না, তিনি বিশ্বাস করতেন দ্বিরাষ্ট্রীয়তত্ত্বে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদর্শী ও সাহসী রাজনীতিবিদ। তিনি সুনিপুণভাবে পদক্ষেপ নিয়েছেন। ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাঙালির ম্যাগনাকার্টা ছয় দফা দিয়েছন। ছয় দফা বাঙালি জাতি বাস্তবায়ন করেছে। বঙ্গবন্ধু ৭০ এর নির্বাচনে একক নেতায় পরিণত হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতা অর্জনই তাঁর দোষ। এ কারণেই ১৫ আগস্টের রক্তাক্ত ইতিহাস। তিনি বলেন, আমাদের পরিষ্কার কথা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার জঘন্য অপরাধে সা¤্রাজ্যবাদী শক্তিা নেতৃত্ব দিয়েছিল।
দিনাজপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্বরূপ বকশী বাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল, দিনাজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদ সরকার, দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি রেজা হুমায়ূন ফারুক চৌধুরী ও সিভিল সার্জন বোরহানুল হক চৌধুরী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও ভারতের জাতির পিতার বিষয়ে সেসব দেশে কোনো দ্বিমত নেই। তারা ‘মূল স্পিরিটে’ এক জায়গায় আছে। বাংলাদেশের তিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। একটি হলো স্বাধীনতার ইশতেহার-যেটা স্বাধীনতার সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল মার্চের দুই তারিখে। দ্বিতীয়টি স্বাধীনতার ঘোষণা- যেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গ্রেফতার হওয়ার আগেই বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তৃতীয়টি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র- যেটি ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগর অধ্যক্ষ ইউসুফ আলী পাঠ করেছিলেন। এগুলো হচ্ছে বেসিক বিষয়। এ জায়গাটায় যদি আমরা এক হই। আমরাতো বলি না আওয়মী লীগ করতে। ৭৫ এর খুনিরা ঘোষণাপত্রকে হত্যা করেছে, স্বাধীনতার ঘোষণাকে হত্যা করেছে। আজকে আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আছি, আমাদের লড়াইটা সেই জায়গায়। আর যারা এর বিরুদ্ধে তাদের লড়াইটা ওই জায়গায়।
তিনি বলেন, বেসিক জায়গাগুলো তারা টেনে ধরতে চায়। জিয়উর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমাদের সংবিধান পাল্টে ফেলতে চেয়েছিল, পারেনি। সকল রাজনৈতিক দলের হাত পা তখন বাধা ছিল। সামরিক আইনের মধ্যেও তিনি তা করতে পারেননি। খন্দকার মোস্তাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। পরবর্তীতে সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান করার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনি তা পারেননি। সেই সংবিধানকে মেনে নিয়ে জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি এক্ট সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত করেছেন। জিয়াউর রহমান যা পারেননি, তার সন্তানরা আজকে বলছে সংবিধান পাল্টে ফেলবে। কত বড় সাহস। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধারা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষেরা কি মরে গেছে? বাংলাদেশে ফয়েজ আহমেদ, এবিএম মুসা, গাফফার চৌধুরীর উত্তরসূরীরা কি মরে গেছে? মরে যায়নি। এখনো কলম আছে। এখনো কলমের কালি শুকায়ে যায়নি। এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অস্ত্র গর্জে ওঠে, এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গর্জে উঠে ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের দুঃস্বপ্ন দেখার যে চিন্তাভাবনা সেগুলো বাদ দিতে হবে। এ দেশে থাকতে হলে ঘোষণাপত্র মানতে হবে, স্বাধীনতার ঘোষণা মানতে হবে। তারপরে এ বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ আছে। এর ব্যত্যয় হলে কোন সুযোগ নেই। যারা সামরিক আইন জারি করে দেশ চালিয়েছে, হ্যাঁ না ভোট দিয়ে বাংলাদেশের ভোটাধিকার হরণ করেছে-তারা এখন আমাদেরকে গণতন্ত্রের কথা বলে। যারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসন করেছে, চাকরি দিয়েছে, তারা এখন বলে দেশে সুশাসন চাই, আইনের শাসন চাই। যারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে, তারা এখন বলে রাজনীতি করার পরিবেশ নেই।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মির্জা ফখরুলকে কেউ কেউ প্রশ্ন করেছিল এত হাসিখুশি কেন? উনি বললেন, আমি দিবালোকের মতো দেখতে পাচ্ছি আমরা ক্ষমতায় আসতেছি। উনি দিবালোকের মতো দেখতে পাচ্ছেন।’ আমি বলি কেন খুশি? কুখ্যাত রাজাকারের ছেলে আজকে জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এর থেকে আর কি পাওয়া হতে পারে। শুধু ফখরুল নয় ফান্ডামেন্টাল বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে যারা আছে তাদের সকলেরই মৃত্যু ভয় ঢুকে গেছে। আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ তাদের মৃত্যুদন্ড নিয়ে হাজির হবে ভোট কেন্দ্রে। কাজেই অত গর্জে ওঠার কোন বিষয় নয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যে উন্নয়ন তা পৃথিবীর দেশে দেশে স্বীকৃতি মিলেছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন, তিনি পৃথিবীতে অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হয়েছেন। আমরা গর্ব করি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের নেতা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথিবীর রাজনীতির নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতায় চলে গেছেন। বিশ্ব নেতৃত্ব তাকে সেভাবেই দেখে এবং শেখ হাসিনাকে সেভাবে দেখে বলেই আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে এত বেশি চিন্তা ভাবনা এত বেশি মাথাব্যথা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:০৬:২১   ১২১ বার পঠিত