প্রশান্ত মহাসাগরে কুক আইল্যান্ডস ও নিউই নামে দুটি দ্বীপকে ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের’ মর্যাদা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অঞ্চলে চীনকে আরও চাপে রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরার।
গত সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দ্বীপ দুটিকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয়ার বিষয়টি জানান। বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই দু’টি দ্বীপরাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। এই দুই দ্বীপরাষ্ট্রের সঙ্গে শিগগিরই কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা হবে বলেও জানান তিনি।
এর ফলে ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চল ‘মুক্ত ও অবাধ’ হবে বলেও মন্তব্য করেন বাইডেন। তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ এই অঞ্চলে অবৈধ মাছ ধরা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে। ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে হাঁটবে এই অঞ্চল।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আবারওএশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক জোট গঠনের তৎপরতার অভিযোগ তুলে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে চীন।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, প্রশান্ত মহাসারগীয় অঞ্চলে সামরিক জোট গঠনের চেষ্টা করলে হুমকির মুখে পড়বে আঞ্চলিক নিরাপত্তা। যা কোনোভাবেই মেনে নেবে না বেইজিং।
চীনের প্রভাব মোকাবিলার কথা বলে দীর্ঘ দিন ধরেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চল নিজেদের একটি বলয় তৈরির চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারতকে এরইমধ্যে গঠন করা হয়েছে কোয়াড নামের একটি জোট।
তবে দীর্ঘ দিন ধরে বেইজিংয়ের অভিযোগ, ন্যাটোর আদলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও একটি সামরিক জোট গঠনের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশকে ওয়াশিংটন পাশে টানার চেষ্টা করছে বলেও দাবি চীনের।
এমন বাস্তবতায় চলতি সপ্তাহে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কয়েকটি দ্বিপরাষ্ট্র নিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বলছে, চীনের আধিপত্য রুখে দিতেই যুক্তরাষ্ট্রের সম্মেলন।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রায় ১৮টি দেশের আয়োজনে হোয়াইট হাউজের এ সম্মেলনে কুক আইল্যান্ড ও নিউইয়েকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। একই ওই দেশের উন্নয়ন নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন খাতে চার কোটি মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সেই ঘোষণায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মুক্তি ও নিরাপদ অঞ্চল গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। লক্ষ্য অর্জনে আমরা ওই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করতে পদ্ধপরিকর।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে চীন। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক জোট গঠন করা হলে তা আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা নিয়ে কারও কোনো উদ্বেগ থাকলে সেটা আলোচনা কিংবা পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমাধান করতে পারি। কিন্তু নিরাপত্তার অজুহাতে কেউ যদি সামরিক জোট গঠনের তৎপরতা চালায় সেটার বিরুদ্ধেই আমাদের অবস্থান।’
একইদিন ঐক্যবদ্ধ বিশ্ব গড়তে এবং নিজেদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা বিশ্বের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে শ্বতপত্র প্রকাশ করে বেইজিং। দশ বছর আগে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যে ভিশন তৈরি করেছিলেন, এটি তারই অংশ বলেও জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৪:১৩ ১২৩ বার পঠিত