যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটনে ওই বৈঠকে আলোচিত খলিস্তানি আন্দোলনের নেতা হারদীপ সিং নিজ্জার হত্যার প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে।
কানাডার সঙ্গে ভারতের চলমান বিতর্ক নিরসনে শিখ নেতা হত্যার তদন্তে সহায়তা করতে দিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। খবর আল জাজিরার।
প্রতিবেদন মতে, বৈঠকের শুরুতে এস জয়শঙ্কর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ ও সহায়তার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
জয়শঙ্কর এদিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গেও বৈঠক করেন। বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া পোস্টে বলা হয়, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অসাধারণ অগ্রগতি ও তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দুই নেতা আলোচনা করেছেন।
চলতি বছরে জুন মাসে খালিস্তানপন্থি সংগঠন ‘খালিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান ও কানাডার সারে এলাকায় শিখ মন্দির তথা গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জারকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে হত্যা করা হয়।
সেই ঘটনায় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ করে কানাডা। গত ১৮ সেপ্টেম্বর পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে প্রকাশ্যে এই অভিযোগ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
কানাডার তদন্তকারী সংস্থাগুলো এ বিষয়ে আরও বিশদ তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি দাবি করেন, বিষয়টি নিয়ে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন তার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও কথা হয়েছে।
ট্রুডোর ওই বিবৃতির পর ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী যে অভিযোগ করেছেন, তা আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’ ঘটনাচক্রে ট্রুডোর অভিযোগের পরই কানাডায় এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি জানান, ওই কূটনীতিক ‘র’-এর কানাডার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করতেন।
ওই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় মোদি সরকার কানাডার এক শীর্ষ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে এবং পাঁচ দিনের মধ্যে দিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি নিজ্জার খুনের ঘটনায় দায় অস্বীকার করে ভারত। পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক বহিষ্কারের পর একে অপরের বিরুদ্ধে ভিসা দেয়া বন্ধ রাখাসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে উভয় পক্ষ।
এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওয়াশিংটন সফর বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবারের বৈঠকের আগে সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলেননি জয়শঙ্কর ও ব্লিঙ্কেন। দু’দেশের পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারাও বৈঠকের আলোচ্যসূচি নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটেন।
বৈঠকের পরে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে জয়শঙ্কর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বলেন, ‘এই গ্রীষ্মে আমাদের প্রধানমন্ত্রী এখানে ছিলেন। জি-২০ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে সমর্থন করেছে সেজন্য ধন্যবাদ।’
অন্যদিকে জয়শঙ্কর-ব্লিঙ্কেন বৈঠকের আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘একটি বিষয় ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছি, (হারদীপ সিংহ) নিজ্জারের হত্যায় কানাডার তদন্তে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে উৎসাহিত করেছে।’
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৮:৪১ ১২৪ বার পঠিত