এশিয়ান গেমস ক্রিকেটে শুভসূচনা করেছে বাংলাদেশ। কোয়ার্টার ফাইনালে মালয়েশিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেছে টাইগাররা।
এশিয়ান গেমস ক্রিকেটে বাছাই দল হিসেবে সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে খেলছে বাংলাদেশ। বুধবার (৪ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর খেলায় মাত্র ২ রানে জয় পেয়েছে টাইগাররা। আফিফ হোসেনের দুর্দান্ত শেষ ওভারে মালয়েশিয়াকে ছিটকে দেয় বাংলাদেশ। এই জয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশের ছেলেরা।
রানের খাতা খোলার আগেই মাহমুদুল হাসান জয়ের বিদায়। ২ রানে বিদায় আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের। দলীয় ৩ রানে জাকির হোসেনও বিদায় নেন। হাংজুতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা এমন ভয়াবহই হয়েছিল। তবে আফিফ হোসেন কে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান অধিনায়ক সাইফ হাসান।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৩৮ রান যোগ করে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন এই দুজন। আফিফ ছিলেন দারুণ ছন্দে। সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে আউট হওয়ার আগে মাত্র ১৪ বলে ২টি করে চার-ছয়ে ২৩ করেন তিনি।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে শাহাদাত হোসেনকে নিয়ে আরও ৪৫ রান যোগ করেন সাইফ। ওয়ানডে স্ট্যাইলে খেলা বাংলাদেশ বলের সঙ্গেও পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারছিল না এদিন। শাহাদাত বিদায়ের আগে ২৬ বলে করেন ২১ রান। অন্যদিকে সাইফ অপরাজিত ছিলেন শেষ পর্যন্ত।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে জাকের আলী ও সাইফ মিলে ২৩ বলে মাত্র ৩০ রান যোগ করেন। ওয়ানডে স্ট্যাইলে খেলে ৫২ বলে ১ চার ও ৩ ছয়ে ৫০ রান করেন সাইফ। জাকের ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় মালয়েশিয়া। জুবাইদি জুল্কফিলেকে ফেরান রিপন মণ্ডল। ১৮ রানে মোহাম্মদ আমিরকে শূন্য রানে আউত করেন আফিফ। পরের বলে অধিনায়ক আহমদ ফাইজকেও ফিরিয়ে দিলে ম্যাচে আশার আলো দেখতে পায় বাংলাদেশ।
এরপর ছোট একটা জুটি টাইগারদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ বাড়াচ্ছিল। কিন্তু ৩৮ রানের মাথায় সৈয়দ আজিজকে ফিরিয়ে দেন রাকিবুল হাসান। ৩১ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ২০ রান করেন এই ওপেনার।
পঞ্চম উইকেটে বিরানদীপ সিং ও বিজয় উন্নি ৩৪ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ থেকে সাইফের দলকে প্রায় ছিটকেই দিচ্ছিল। কিন্তু ফের ত্রাতার ভূমিকায় হাজির আফিফ। ফের জোড়া উইকেট শিকার করেন তিনি। ১৪ রান করা উন্নিকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরের বলেই ফেরান শারভিন মুনিয়ান্দিকে।
তবে উইকেটে থাকা বিরানদীপ বাংলাদেশের জয়-পরাজয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে দারুণ লড়ছিলেন। আইনুল হাফিজসকে নিয়ে ৪০ রানের জুটি গড়ে জয়টা হাতের নাগালেই নিয়ে গিয়েছিলেন। দলীয় ১১২ রানে ১৪ রান করা হাফিজসকে রিশাদ হোসেন ফিরিয়ে দেন তখন মালয়েশিয়ার জয়ের জন্য ৭ বলে দরকার ৫ রান।
আফিফ হোসেনকেও বাংলাদেশের এই জয়ের নায়ক বলা যায়। ২০তম ওভারে বল হাতে নিয়ে দারুণ বোলিং করেন আফিফ। প্রথম তিন বলে কোন রানই নিতে দেননি বিরানদীপকে। চতুর্থ বলে বাধ্য হয়ে বড় শট খেলতে গিয়ে জয়ের হাতে ধরা পড়েন বিরানদীপ। ৩৯ বলে ৩ চার ও ৪ ছয়ে ৫২ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন এই ব্যাটার। তারপরও ছিল অনিশ্চয়তা। শেষ দুই বলে একটা চার মারতে পারলেও হার এড়াতে পারত মালয়েশিয়া। কিন্তু মাত্র ২ রান নিতে পারেন আনোয়ার ও ইদ্রুস.২ রানে জয় পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পক্ষে আফিফ হোসেন ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন। রিপন মণ্ডলও মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। এটি করে উইকেট নেন রিশাদ ও রাকিবুল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১৪:৩২ ১০৭ বার পঠিত