একপেশে ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাল নিউজিল্যান্ড

প্রথম পাতা » খেলাধুলা » একপেশে ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাল নিউজিল্যান্ড
শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩



একপেশে ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাল নিউজিল্যান্ড

ঠাণ্ডা মাথার খুনি বললেও কম হয়! ধীরস্থির মেজাজে রানের খাতা বড় করেছেন। এরপর সুযোগ বুঝে দেখে-শুনে বল পাঠিয়েছেন সীমানার বাইরে। কে বলবে ৮ মাস পরে জাতীয় দলের একাদশে ফিরেছেন কেইন উইলিয়ামসন! অবশ্য বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে একটি অর্ধশতক ও ৩৭ রানের ইনিংস তার সুখকর প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিল। এরপর অপরাজিত ৭৮ রান করে বাংলাদেশকে একেবারেই ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন কিউই অধিনায়ক। ২৪৫ রানের সংগ্রহ নেওয়া টাইগাররা বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচ হেরেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে।

হতাশার হলেও সত্যি, চলমান বিশ্বকাপে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রান। এর সঙ্গে চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামের অতীত পরিসংখ্যানও কিছুটা আশা যোগাচ্ছিল সাকিব আল হাসানদের। কারণ এই ভেন্যুতে প্রথমে ব্যাট করা দলের গড় রান যে ২২৪, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা দলের গড় সংগ্রহ ২০৬। যদিও সেই সমীকরণ আর বাংলাদেশের জন্য খাটেনি।

ম্যাচজুড়ে কয়েক বার উইকেটের সুযোগ দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তার ভেতর দুয়েকটা ছিল কঠিন, এরপর ক্যাচ-রানআউট মিলিয়ে সহজ সুযোগও বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারেনি। অথচ মাত্র ১২ রানেই প্রথম উইকেট হারানো কিউইরা বড় বিপদে পড়তে পারত। কিন্তু ঠাণ্ডা মাথার উইলিয়ামসনের পর ডেভন কনওয়ে ও ড্যারিল মিচেলরা পথ হারাতে দেয়নি কিউইদের। আহত হয়ে ৭৮ রানে যখন উইলিয়ামসন ফিরছিলেন, তখন তাদের জয়ের আনুষ্ঠানিকতা বাকি ছিল কেবল। তার আগে কনওয়ের সঙ্গে ৮০ এবং মিচেলের সঙ্গে তিনি ১০৮ রানের দুটি জয়ের ভিত গড়া জুটি গড়েন।

দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়ে আগের দুই ম্যাচ জেতা নিউজিল্যান্ডের সামনে বাংলাদেশের দেওয়া ২৪৬ রানের লক্ষ্য হয়তো মামুলীই মনে হয়েছিল। রানতাড়ায় নেমে তারা শুরুতে হোঁচট খায় দলীয় ১২ রানেই এক ওপেনারকে হারিয়ে। আগের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি পাওয়া রাচিন রবীন্দ্র ফিরেছেন ৯ রানে (১৩ বল)। তৃতীয় ওভারে অফ-স্টাম্পের কিছুটা বাইরে গুড লেংথে বলটা করেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। বড় শট খেলার চেষ্টায় রবীন্দ্র ইনসাইড এডজ হয়ে মুশফিকুর রহিমের তালুবন্দী হন।

শুরুতেই উইকেট হারালেও পাল্টা লড়াই করছেন পরবর্তী দুই কিউই ব্যাটার। অধিনায়ক উইলিয়ামসন ধীরে ধীরে উইকেটে থিতু হয়েছেন, অন্যপ্রান্তে ফর্মে থাকা ডেভন কনওয়েও শুরুর সংগ্রামের পর ছন্দ ফিরে পান। এর মাঝে কনওয়ের কট বিহাইন্ডের জন্য টাইগাররা জোরালো আবেদন করলেও আম্পায়ারের সাড়া মেলেনি। বিপরীতে সাকিবরা রিভিউ নিয়েও হারিয়ে ফেলেন। ব্যাটিংয়ের সময় পায়ে টান পেয়েছিলেন সাকিব, এরপর শুরুতে বোলিংয়েও খুব একটা স্বস্তিতে আছেন বলে মনে হয়নি। তবুও পুরো ১০ ওভারই বল করেছেন। প্রয়োজনের মুহূর্তে ব্রেক-থ্রুও দেন কনওয়েকে ফিরিয়ে। এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে কিউই ওপেনার ফিরেন ৪৫ রানে (৫৯ বল)।

এই উইকেটের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপের সেরা অলরাউন্ডার বনে যান টাইগার দলপতি। ৫ বিশ্বকাপ খেলে সাকিব ১ হাজার ১৬১ রান এবং ৩৮ উইকেট নিয়েছেন। পেছনে ফেলেছেন তার সামনে থাকা ক্রিস গেইল ও সনাৎ জয়সুরিয়াকে। এরপর ১৯তম ওভারে একবার জীবন পেয়েছিলেন উইলিয়ামসন। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ফ্লিক করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ককে, শর্ট মিডউইকেটে বাঁ-দিকে ডাইভ দিয়ে হাত লাগাতে পেরেছেন শুধু তাসকিন। ক্যাচটা আর ধরা হয়নি।

পরবর্তীতে ৮১ বলে ওয়ানডেতে উইলিয়ামসন ব্যক্তিগত ৪৩তম অর্ধশতক পূর্ণ করেন। প্রয়োজনীয় রান কম থাকায় বাউন্ডারি মারার তাড়া ছিল না কিউই ব্যাটারদের। সে কারণে তারা তাড়াহুড়ো দেখাননি। মারমুখী মেজাজে খেলা মিচেলও ধরে খেলার চেষ্টা করেছেন। তবুও ব্যক্তিগত ফিফটি পেয়ে যান তিনি ৪৫ বলে। কিউইদের দলীয় রান যখন ২০০ পেরোয় তখন আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন উইলিয়ামসন। গ্লেন ফিলিপসকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন মিচেল। শেষপর্যন্ত তিনি ৮৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৬৭ বলের ইনিংসটি এই ব্যাটার সাজিয়েছেন ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায়। আরেক অপরাজিত ব্যাটার ফিলিপস করেন ১৬ রান। ৪৩ বল হাতে রেখেই কিউইরা টানা তৃতীয় জয় নিশ্চিত করেছে। যা তাদের আবারও তুলে দিয়েছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে।

এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে টাইগারদের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। কিউই পেসারদের গতি আর বাউন্সে যেন অথৈ সাগরে হাবুডুবু খেয়েছেন বাংলাদেশি ব্যাটাররা। স্কোরবোর্ডে ৫৬ রান তুলতেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। শঙ্কা ছিল আরও একটি ব্যাটিংয়ে বিবর্ণ দিন দেখার।

তবে শুরুর ব্যাটিং ধসের পর দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিক-সাকিবের গুরুত্বপূর্ণ ৯৬ রানের জুটিতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালায় টিম টাইগার্স। ৫১ বলে ৪০ রান করে আউট হন সাকিব। সাকিব-মুশফিকের বিদায়ের পর ফের পথ হারায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ২৪৫ রানে।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৬ রানের (৭৫ বলে) ইনিংস খেলেন মুশফিকুর রহিম। শেষ দিকে ৪৯ বলে ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। যদিও ক্রিজে যতক্ষণ ছিলেন খুব একটা স্বস্তিতে ছিলেন না রিয়াদ। ব্যাটেও কানেক্ট করতে পারছিলেন না ঠিকঠাক। এদিন নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট পেয়েছেন লকি ফার্গুসন। এছাড়া ম্যাট হ্যানরি ও ট্রেন্ট বোল্ট দুটি করে উইকেট দখলে নিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৩:০৫   ১১৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

খেলাধুলা’র আরও খবর


সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারের গণসংবর্ধনা
অজি পেসারদের তোপে ১৫০ রানে অলআউট ভারত
ফেডারেশন কাপের একই গ্রুপে আবাহনী ও মোহামেডান
ভেনেজুয়েলার পর উরুগুয়ের বিপক্ষেও ড্র ব্রাজিলের
পেরুকে হারিয়ে জয়ে ফিরল আর্জেন্টিনা
২১০তম ম্যাচের পর ‘প্রথম’ জয় র‌্যাংকিংয়ের ২১০তম দলের
উরুগুয়ে ম্যাচের একদিন আগেই একাদশ প্রকাশ ব্রাজিলের
ক্যারিবিয়ানে বাংলাদেশকেও তুলে ধরতে চায় রংপুর রাইডার্স
৪৩৯ রানের টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডকে হারালো উইন্ডিজ
২-১ গোলের জয়ে বছর শেষ করল বাংলাদেশ

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ