বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে পাঁচটি সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল। রোববার (১৫ অক্টোবর) তারা এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করার পরিকল্পনার কথাও বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে যে পাঁচটি সুপারিশ করা হয়েছে, সেগুলো হলো: পরিমিত রাজনৈতিক বক্তৃতা এবং নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে প্রকাশ্য সংলাপে বসা; বাকস্বাধীনতার সুরক্ষা এবং নাগরিকদের জন্য এমন একটি জায়গা তৈরি করা, যেখানে ভিন্নমতকে সম্মান করা হয়; সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের অঙ্গীকার, যারা রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আসা; স্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থাপনাসহ সব দলের অর্থপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার পরিস্থিতি তৈরি করা এবং নাগরিকদের মধ্যে সক্রিয় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে অংশগ্রহণের সংস্কৃতি তৈরি করা ও তা এগিয়ে নেয়া।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন, দরিদ্র হ্রাস ও পরিবেশগত অগ্রগতি সত্ত্বেও রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা কমে গেছে। এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর কালো ছায়া ফেলছে এবং অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের ধারাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
এতে আরও বলা হয়, যদি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করেন এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা না হয়, তবে দেশের প্রধান বিরোধী দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কটের পরিকল্পনা করছে। যদিও এসব দাবি মেনে নিতে অস্বীকার করেছে সরকার। ফলে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের নাগরিকরা তাদের রাজনৈতিক পছন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ওপর থেকেও তাদের আস্থা উঠে যাচ্ছে। ব্যাপক অনাস্থা, রাজনৈতিক সংলাপের অভাবের কারণে উত্তেজনা ও সহিংসতা বাড়ছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি দুই থেকে আড়াই মাস। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণে ঢাকা সফরে আসে যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলটি।
গত ৭ অক্টোবর থেকে নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর সফরের পঞ্চম দিনে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রতিনিধি দলটি। এর আগে এ দলের প্রতিনিধিরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গেও সচিবালয়ে বৈঠক করেন।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সফরের চতুর্থ দিনের শুরুতে মার্কিন প্রতিনিধিদের গন্তব্য ছিল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ইসি কার্যালয়।
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পদ্ধতি সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে জানতে চেয়েছে পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা। এছাড়াও তাদের জিজ্ঞাসা ছিল সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ইসি ও সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে।
এছাড়া নারী সংসদ সদস্য, আইনজীবীসহ বেশকিছু সংগঠনের সঙ্গেও আলোচনা করেছে মার্কিন প্রতিনিধি দলটি।
এর আগে, সোমবার (৯ অক্টোবর) ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধীদল জাতীয় পার্টি এবং বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল।
দেশটির অর্থায়নে পরিচালিত ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) প্রতিনিধি দলটি ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করে।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৪৩:১৩ ১০০ বার পঠিত