জুমার দিন সপ্তাহের ঈদের দিন। রাসুল সা. এ দিনের শ্রেষ্ঠত্ব মর্যাদার কথা বলেছেন। জুমার দিন মুমিনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্ববহ একটি দিন। পাঁচ কারণে জুমাবার ফজিলতপূর্ণ।
হজরত আবু লুবাবা বিন আবদুল মুনজির রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. জুমার দিন গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পাঁচটি কারণের কথা বলেছেন। ১. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম আ.-কে সৃষ্টি করেছেন। ২. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম আ.-কে জমিনে অবতরণ করিয়েছেন। ৩. এই দিনে আদম আ.-কে মৃত্যু দিয়েছেন। ৪. এই দিনে এমন সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা কিছুই প্রার্থনা করবে তিনি তা দেবেন। যতক্ষণ না সে হারাম কিছু প্রার্থনা করবে না। ৫. এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস ৮৯৫)
জুমার দিন মুমিনের জন্য সহজ কিছু কাজেই জান্নাতের কথা বলেছেন মহানবী সা.। এ সম্পর্কে রাসুল সা. থেকে বেশ কয়েকটি হাদিসের বর্ণিত হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
সূর্যদয় হওয়ার দিনসমূহের মধ্যে শুক্রবার হলো সর্বোত্তম। এদিন হজরত আদম আ.কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এদিন তাকে বেহেশতে প্রবেশ করানো হয়েছে, আল্লাহর খলিফা নিযুক্ত করা হয়েছে, আর এদিনই কেয়ামত হবে (বোখারি)
জুমআর দিন বিশেষ পাঁচ কাজে মিলবে জান্নাতের নিশ্চয়তা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকেও তা বর্ণিত হয়েছে। হাদিসে এসেছে, হজরত আবু সাঈদ খুদরি রা. বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সা. বলেন,
এমন পাঁচটি কাজ আছে যে ব্যক্তি একই দিনে ওই পাঁচটি কাজ করবে আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতবাসী বলে লিখে দেবেন। আর তা হলো রোগী দেখা তথা রোগীর সেবাযত্ন বা খোঁজ-খবর নেয়া। জানাজায় অংশগ্রহণ করা। রোজা রাখা। জুমার নামাজ আদায় করা। গোলামমুক্ত করে দেয়া। (মুসলিম)
এ পাঁচটি কাজ শুধু জুমার দিনেই করা সম্ভব। জুমার দিন ছাড়া এ কাজগুলো অন্য দিন করা সম্ভব নয়। কারণ, এ পাঁচটি কাজের মধ্যে জুমার নামাজও একটি।
জুমার দিন এ ছাড়াও অনেক ফজিলতের কথা রাসুল সা. বলেছেন, জুমার দিন গোসল করা এবং আগে আগে মসজিদে যাওয়া অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আউস বিন আউস সাকাফি রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেছেন,
যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করল, দ্রুততর সময়ে মসজিদে গেল ও (ইমামের) কাছাকাছি বসে মনোযোগসহ (খুতবা) শুনল, তার জন্য প্রতি কদমের বদলে এক বছরের রোজা ও নামাজের সওয়াব থাকবে। (আবু দাউদ, হাদিস ৩৪৫)
অন্য হাদিসে রাসুল সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, অতঃপর প্রথমে মসজিদে গেল সে যেন একটি উট কোরবানি করল। যে এরপর মসজিদে গেল, সে যেন একটি গরু কোরবানি করল। আর যে এরপর ঢুকল, সে যেন ছাগল কোরবানি করল, এরপর যে ঢুকল সে যেন মুরগি কোরবানি করল, আর যে এরপর ঢুকল সে ডিম সদকা করল। অতঃপর ইমাম খুতবার জন্য এলে ফেরেশতারা আলোচনা শোনা শুরু করে।’ (বোখারি, হাদিস ৮৪১)
এ ছাড়াও বহু ফজিলতের কথা হাদিসে উল্লেখ আছে। জুমার অন্যতম আমল সুরা কাহাফ পাঠ করা। আবু সাইদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়বে তা দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার জন্য আলোকিত হয়ে থাকবে। আর যে ব্যক্তি এই সুরার শেষ ১০ আয়াত পাঠ করবে অতঃপর দাজ্জাল বের হলে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। যে ব্যক্তি অজুর পর এই দোয়া পড়বে তার নাম একটি চিঠিতে লেখা হবে। অতঃপর তাতে সিল দেয়া হবে, যা কেয়ামত পর্যন্ত আর ভাঙা হবে না।’ (সহিহ তারগিব, হাদিস ১৪৭৩, আল মুসতাদরাক ২/৩৯৯)
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩১:২৯ ১০৮ বার পঠিত