কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিএনপি ২৮ অক্টোবরের মতো যদি আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে তাহলে কঠোর হস্তে মোকাবিলা করা হবে।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
২৮ অক্টোবর বিএনপির বিরাট সমাবেশ ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই সমাবেশ থেকে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে দিল। আমি আমার বাসা থেকে সব দেখেছি। আমার বাসার স্টাফরাও ছিল। তারা বলেছে এটা প্রধান বিচারপতির বাসা। ওরা (বিএনপিকর্মীরা) বলতেছে এটাই আগে ভাঙতে হবে, বিচার করে-করে আমাদের লোকজনদের ফাঁসি দিছে বিচারপতিরা। তারা জেনে সুপরিকল্পিতভাবে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। যারা করেছে তারা রাজনৈতিকভাবে বিএনপির প্রথম লাইনের কর্মী এবং তারা সচেতন।
আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, পৃথিবীর কোথাও নেই যেখানে পুলিশের ওপর আক্রমণ করা হয়, পুলিশের গাড়ি পোড়ানো হয়।
দুমাস পরে নির্বাচন। এভাবে কি চলতে থাকবে? এর সমাধান তো রাজনীতিবিদদের হাতেই আছে। আলোচনার মাধ্যমে কি এর সমাধান করা যায় কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে অনেক সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই হয়েছে। সংলাপের তো কোনো বিকল্প নেই। সেটি আমাদের করতে হবে। আমরাও বলি এবং আমরাও মনে করি সংলাপের মাধ্যমেই আমাদের এই সমস্যা সমাধান করতে হবে।
কিন্তু আপনি যদি দরজা বন্ধ করে… যেমন ইসরায়েল তারা তো কোনোদিনই সংলাপের মাধ্যমে এটার সমাধান করবে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে ইসরায়েল শুরু হয়েছে সেই থেকেই তারা আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে এগোচ্ছে। এবং দেখেন মানবতার কি ধরনের বিপর্যয় বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, তারা যদি বলে যে, শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, এ সরকার থাকলে নির্বাচনে যাবে না, এই নির্বাচন কমিশনের আওতায় তারা নির্বাচন করবে না— এই দুইটা কথা তারা এমনভাবে বলেছে, এখানে আলোচনা করে কি হবে? সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ তো এই মুহূর্তে নেই। কাজেই সেটা তো হবে না। নির্বাচন কমিশন তো আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই করা হয়েছে। সেই নির্বাচন কমিশন না থাকলে নির্বাচন হবে কেমনে?
তিনি বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নতুন সরকার গঠন করে কার্যকর করতে হবে, সংসদ বসতে হবে। এই বেসিক ইস্যুগুলো তারা যদি মেনে নিত তখন আমরা অবশ্যই তাদের সঙ্গে বসে কীভাবে নির্বাচনকে সুন্দর করা যায়, কোন কোন এসপি বা ডিসিকে সরাতে হবে তারা বলে। সেটা যদি বলে বা অন্য কোনো প্রস্তাব দেয় সেটা আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করা যেতে পারে।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে দেশ ছেড়ে পালাতে হবে, পালানোর জায়গা পাবে না— প্রতিদিন এই কথা বললে কি সংলাপ হবে-এমন প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, সেই সংলাপ তো ফলপ্রসূ হবে না। আমরা সংলাপের বিরুদ্ধে না কিন্তু দরজা বন্ধ করে দিয়ে তো সংলাপ করা যাবে না।।
বিএনপির অবরোধ কর্মসূচির বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, তারা তিন দিনের অবরোধ দিয়েছে- এই পরিস্থিতিতে আমরা রাজনৈতিকভাবে এটা মোকাবিলার চেষ্টা করছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে।
এসময় বিএনপি নির্বাচনে আসবে বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ নির্বাচন হবে এবং আমি মনে করি তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। একটা মুহূর্তে তখন তারাও নির্বাচনে আসবে। তারা আন্দোলনে সফল হতে পারবে না।
কিসের ওপর ভিত্তি করে বলছেন যে তারা নির্বাচনে আসবে-জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, তাদের প্রস্তুতি আছে, বড় দল। আমরা আন্দোলন করতেছি তারাও করতেছে। যখন স্বীকার করবে নির্বাচন করবে আলাপ-আলোচনা করে তারাও মনোনয়ন দেবে। এমন তো না যে তারা নতুন ক্ষমতায় আসছে, তারা তো আগেও ক্ষমতায় ছিল। কাজেই তাদেরও প্রস্তুতি আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৬:০২ ১৮৩ বার পঠিত