রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, বিএনপি ভোটে আসতে চায় না। কারণ তারা জানে জনগণ তাদেরকে ভোট দিবে না। তারা যেসব কাজ করেছে তাতে ভোট চাওয়ার মত মুখ তাদের নেই।
তিনি বলেন, ‘আন্দোলন আমরাও করেছি, আমরা মার খেয়েছি, আমরা কোনদিন পুলিশকে মারি নাই। আমাদের লোকজন জীবন দিয়েছে, জেলখানায় গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কতবার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। কই খাদেলা জিয়াকেতো একবারও হত্যা চেষ্টা করা হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে জেলখানার মধ্যেও হত্যা করা হয়েছে। বিএনপির কোন নেতাতো এভাবে মারা যায়নি’।
আজ শনিবার নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি সীমান্তে আইকনিক স্টেশন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আন্দোলন করছেন করেন, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে আক্রমণ, ভাঙ্গচুর, পুলিশ হত্যা কেন? পুলিশতো দায়িত্ব পালন করছেন নিরাপত্তার জন্য’।
নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আজকে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। চিলাহাটি থেকে ট্রেন সকাল-বিকাল ঢাকা যাচ্ছে, এ পথে খুলনা ও রাজশাহীর অন্যান্য ট্রেন চলছে। আন্ত:দেশীয় ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস এনজিপি (ভারত) থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলছে। এ এলাকার মানুষের চাহিদা ছিল মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে ভারত যাতায়াতের। যেটা কাঠামোর কারণে এতোদিন সম্ভব হয়ে উঠেনি। এখন স্টেশন ভবন নির্মানের ফলে সেটি পুরণ হবে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এখানে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস চালু হবে। এরপর চিলাহাটিতে ট্রেনে উঠে ভারতের এনজেপি, জলপাইগুড়ি যাতায়াত করা যাবে। আগামী ১১ তারিখ চট্টগ্রামের কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল উদ্বোধন হবে। ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে উত্তরাঞ্চলের নীলফামারীর চিলাহাটি সীমান্ত থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত টেন চলবে। চিলাহাটি স্থলবন্দর হবে এবং খুলনার মোংলা বন্দর থেকে সরাসরি শুধু ভারত নয়, নেপাল-ভুটান পর্যন্ত মালামাল আনা নেওয়া করা যাবে’।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার, জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ, পুলিশ সুপার মো. গোলাম সবুর, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি লিংক রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহীম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনামলে চিলাহাটি হয়ে ভারতের হলদিবাড়ি পথে শুরু হওয়া রেল সংযোগটি ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়। সংযোগটি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে চালুর উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহন করে চিলাহাটি থেকে ভারত সীমান্ত পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭২ কিলোমিটার মেইন লাইনসহ অন্যান্য স্থাপনার কাজ শেষে ৫৫ বছর পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ পথে একটি মালবাহী ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন রেল সংযোগের। এরপর ২০২১ সালের ২৭ মার্চ ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত মিতালী এক্সপ্রেস নামে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। কোভিড পরবর্তী ২০২১ সালের ১ জুন থেকে দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত চলাচল করছে যাত্রিবাহী ট্রেনটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫০:৩৩ ১২৫ বার পঠিত