প্রয়োজনীয় ত্রাণসহায়তার অভাবে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনেরই প্রতিদিন খাবার জোটে না বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। রোববার (১০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) গাজা পরিদর্শন করে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) উপ-পরিচালক কার্ল স্কাউ কার্লের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে কার্ল বলেন, ‘এখানে পর্যাপ্ত খাবার নেই। মানুষ অভুক্ত থাকছে।’
পোস্টে ডব্লিউএফপির উপ-পরিচালক আরও বলেন, প্রয়োজনীয় ত্রাণসহায়তার সামান্যই গাজায় ঢুকতে পারছে। এখানকার বাসিন্দাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনেরই প্রতিদিন খাবার জোটে না।
স্কাউ বলেন, গাজার চলমান পরিস্থিতির কারণে সেখানে সহায়তা সরবরাহ ‘প্রায় অসম্ভব’ হয়ে উঠেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় হামাস। ওই দিনই সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। গাজায় ত্রাণসহায়তা প্রবেশেও বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশটি। অবরুদ্ধ গাজার বাসিন্দারা ত্রাণসহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচট বলেছেন, কোনো বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু এবং দুর্ভোগ আমাদের কাছে বেদনাদায়ক, তবে আমাদের কাছে আর কোনো বিকল্প নেই।
তার দাবি, ‘গাজা ভূখণ্ডের ভেতরে যতটা সম্ভব অগ্রগতি অর্জন করতে আমরা সবকিছু করছি।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে ঢুকে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় টানা বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
মাঝে হামাসের সঙ্গে এক সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত সপ্তাহ থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজায় হামলা আরও তীব্র করেছে দখলদার সেনারা।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের হামলায় এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ।
নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কমপক্ষে ৭ হাজার ১১২ জন শিশু এবং ৪ হাজার ৮৮৫ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া ভূখণ্ডটিতে এখনও প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২১:৩৪ ৮৫ বার পঠিত