দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে ও বাতিল চেয়ে পাঁচ দিনে আপিল করেছেন ৫৬১ জন প্রার্থী। আপিল গ্রহণ শেষে শুনানি শুরু হয়েছে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে এসব আপিলের শুনানি ও নিষ্পত্তি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এই কার্যক্রম চলবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সকাল থেকে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে ভিড় করেছেন প্রার্থীরা। তারা আশা করছে প্রার্থিতা ফিরে পাবেন।
ইসি সচিব জাহাংগীর আলম জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দেওয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে গত পাঁচদিনে আপিল আবেদন পড়েছে ৫৬১টি। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি করে কমিশন সিদ্ধান্ত দেবে।
এর আগে, শনিবার ছিল আপিলের শেষ দিন। প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিলের পাশাপাশি অনেক হেভিওয়েটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেও আপিল করেছেন প্রার্থীরা। পাশাপাশি হয়েছে পাল্টাপাল্টি আপিলও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ ফারুকের মনোনয়নপত্রের সমর্থনকারী কে বি এস আহমেদ। অন্যদিকে হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করার অভিযোগ তুলে ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান ওমরের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনির। এছাড়া সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলে বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাম্মী আহমেদ।
অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসের পাসপোর্টধারী অভিযোগ করে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত শামীম হকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আবেদন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। অন্যদিকে এ কে আজাদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে পাল্টা আপিল করেছেন শামীম হক। এ ছাড়া আয়কর সংক্রান্ত নথিতে অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে পটুয়াখালী-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রুহুল আমিন হাওলাদারের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেছেন মো. নজরুল ইসলাম। অন্যদিকে দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ এনে সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
ফৌজদারি মামলা থেকে অব্যাহতির প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। নিজের প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিলের পাশাপাশি তিনি একই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগে প্রার্থীতা বাতিলের আবেদন করেছেন। এ ছাড়াও ময়মনসিংহ-৯ আসনে আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম, টাঙ্গাইল-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছোট মনির, নেত্রকোনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাজ্জাদুল হাসান, নোয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের একরামুল করিম চৌধুরী ও কুমিল্লা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করা হয়েছে।
এবার সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সারা দেশে ৭৪৭ জন স্বতন্ত্রসহ মোট দু’হাজার ৭১৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। বাছাই শেষে এক হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৭:২৪ ৮৯ বার পঠিত